পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের নিন্মতম মুজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা চূড়ান্তের পর ঢাকার আশুলিয়ার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা অসন্তোষ প্রকাশ করে। প্রায় এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনের মুখে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল। আবার অনেক কারখানায় অনির্দিষ্টকালের ছুটি ঘোষণা করায় কাজে যোগ দিতে পারেনি শ্রমিকরা। এদিকে, বেশ কিছু কারখানা কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
শনিবার (১১ নভেম্বর) সকালে আশুলিয়ার জামগড়া, ছয়তলা, বেরণ ও নরসিংহপুর এলাকায় গেলে এখানকার কারখানাগুলোর সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ এমন নোটিশ দেখা গেছে। এসময় ঐসব কারখানার ফটকের সামনে অনেক শ্রমিকদের দেখা গেছে যারা কাজে যোগ দিতে এসেছিলো।
ওই কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে- জামগড়া এলাকার দি রোজ ড্রেসেস লিমিটেড, পাইওনিয়ার ক্যাজুয়াল ওয়্যার লিমিটেড, বেরণ এলাকার এনভয় গ্রুপের মানটা এ্যাপারেলস লিমিটেড, স্টারলিংক অ্যাপারেলস লিমিটেড, শারমিন গ্রুপের এ.এম ডিজাইন, হলিউড গার্মেন্টস লিমিটেড, নরসিংহপুর এলাকার হামিম গ্রুপের দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়্যার লিমিটেড, বড় রাঙ্গামাটিয়া এলাকার টেক্সটাউন টিমিটেড ও অরনেট নীট গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, কাঠগড়া এলাকার এআর জিন্স ও আগামী অ্যাপারেলস লিমিটেড প্রমুখ।
নোটিশে বলা হয়েছে, গত ৯ নভেম্বর সকাল ১০ টায় এবং বিগত কয়েকদিন ধরে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে বহিরাগত পোশাক শ্রমিকগণ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে কারখানা ভাংচুর ও কারখানার কাজ বন্ধ রাখায় কর্মস্থলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে কারখানার উৎপাদন কাজ মারাত্মকভাবে ব্যহত হয়েছে। এমতাবস্থায় কারখানা কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে ১০ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩ (১) ধারা মোতাবেক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলো।
তবে উপস্থিত কারখানার শ্রমিকগণ জানান, গত বৃহস্পতিবার কারখানায় এসে কাজ যোগ দেয়ার পরপরই ছুটি দেয়া হয়। এরপর আমরা সবাই বাসায় ফিরে যাই। শুক্রবার ছিল সাপ্তাহিক বন্ধ। আজ (শনিবার) সকালে কারখানার সামনে এসে অনির্দিষ্টকালের ছুটির নোটিশ দেখতে পাই। তবে মালিকপক্ষ কি কারণে বন্ধ দিলো আমাদের কিছুই জানানো হয় নাই।
তারা আরও জানান, কারখানা কবে খুলবে মালিকপক্ষ সেটা জানায়নি। এখন তারা যে কোন একটা সিদ্ধান্ত নিক। ২০-২৫ হাজার টাকা যা-ই বেতন বাড়াক, কারখানা খুলে দিলে আমরা কাজে যোগ দিব। আমরাতো কাজ করতে চাই। কারণ হেলপারের বেতন ১২ হাজার ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে কিন্তু অপারেটরদেরতো কোন ডিসিশন দিচ্ছে না। এই জন্য আমরা কাজ করিনি।
তবে কারখানা বন্ধ ঘোষণার বিষয়ে মালিকপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় নাই।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম জানিয়েছেন, তাদের প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে একশ প্লাস কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সংখ্যা হয়ত আরও ৫-৭ টা বাড়তে পারে।
বার্তাবাজার/এম আই