সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনোভাবেই ঘরে ফিরে যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান।
বুধবার ঢাকার মিরপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মিরপুর জোন আয়োজিত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, অবিলম্বে গণবিরোধী সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং দলের আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ জাতীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে তৃতীয় দফার ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের সমর্থনে বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর-২ নম্বর ষাট ফিট পাকা মসজিদ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বারেক মোল্লার মোড়ে এসে পথসভার মাধ্যমে শেষ হয়। পথসভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য আবু নকীব, আব্দুল হামিদ, হাবিবুল্লাহ রুমী, আব্দুর রকীব, রিমন তমাল, গাজী মোহাম্মদ হাফিজ, শাহজালান ও জামাল উদ্দীন, ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান, তানভীর ও মওদুদ আহমদ প্রমুখ।
মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘চলমান দুর্বার গণআন্দোলনে ভীত হয়ে নৈশভোটের সরকার একেক সময় একেক কথা বলে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। তারা কোনোভাবেই জনগণের ভাষা উপলব্ধি করার চেষ্টা করছে না। তারা আবারো ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচনের নামে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে অবৈধ ক্ষমতার মেয়াদ বর্ধিত করতে চায়। কিন্তু ঘুঘুকে বারবার ধান খাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না বরং বীর জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের সে ষড়যন্ত্র রুখে দেবে।’
তিনি সরকারকে সময় থাকতে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান। অন্যথায় জনতার উত্তাল স্রোতে ফ্যাসিবাদের তখতে তাউস খড়কুটার মতো ভেসে যাবে বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘সরকারের উপর্যুপরি ব্যর্থতার কারণেই নিত্যপণ্যের মূল্য এখন সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তারা নিজের সীমাহীন ব্যর্থতা ঢাকতে এবং গণদাবিকে পাশ কাটানোর জন্যই আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ জাতীয় নেতাদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। সরকারের নির্মম জিঘাংসা থেকে রেহাই পাননি দেশের বরেণ্য আলেম-উলামাও। মূলত, তারা দেশকে মেধা ও নেতৃত্বশ্যূ করে অবৈধ রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করতে চায়। কিন্তু এসব করে স্বৈরাচারী ও বাকশালী সরকারের শেষ রক্ষা হবে না।’
তিনি সরকারকে জুলুম-নির্যাতনের পথ পরিহার করে অবিলম্বে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ সব জাতীয় নেতার নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় সার্বিক পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
বাড্ডায় সড়কপথ অবরোধ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আহুত তৃতীয় দফার দুই দিনের সড়ক, নৌ ও রেলপথ অবরোধের অংশ হিসেবে আজ প্রথম দিনে কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দিন মোল্লার নেতৃত্বে রাজধানীর বাড্ডা-রামপুরা অঞ্চলের বাড্ডা এলাকায় শান্তিপূর্ণ সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ অবরোধ কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগরী মজলিশে শূরা সদস্য ও বাড্ডা উত্তর থানা আমির মাওলানা কুতুবউদ্দিন ও বাড্ডা পশ্চিম থানা আমির আব্দুস সবুর ফরহাদ প্রমুখ।
আগারগাঁও সড়কপথ অবরোধ
জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের কাফরুল অঞ্চলের উদ্যোগে সকালে ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. মো. ফখরুদ্দিন মানিকের নেতৃত্বে রাজপথ অবরোধ করেছে জামায়াতের কর্মীরা। এসময় পুলিশ অবরোধস্থলে এসে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে চাইলে একপর্যায়ে জামায়াতের তিনজন কর্মীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও মিরপুর পূর্ব থানার আমির টুটুল, অঞ্চল টিম সদস্য আলাউদ্দিন মোল্লা, ইসলামী ছাত্রশিবিরের মহানগর পশ্চিমের মিডিয়া সম্পাদক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শ্রমিক নেতা মিজানুর রহমান, জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য আব্দুল মতিন খান, আনোয়ারুল করিম, রেজাউল করিম, আহসান হাবীব, মুসআব মুহাইমিন,আতিক হাসান, আশিক, আলী হাসান, আশিকুর রহমান, গোলাম রাব্বানী, আনিস, জাকির, পরশ প্রমুখ।
পল্লবীতে অবরোধ
কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির তৃতীয় দফা অবরোধের প্রথম দিনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের পল্লবী অঞ্চলের উদ্যোগে আজ ৮ নভেম্বর সকালে মিরপুর ১১ তে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে জামায়াতের কর্মীরা। জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত অবরোধে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য সাইফুল কাদের, আবু হানিফ, আশরাফুল আলম, আবুল কালাম পাঠান প্রমুখ।
এছাড়াও আব্দুল্লাহপুর, নতুন বাজার, আদাবর, তেজগাঁও রেল স্টেশন এবং কুড়িল বিশ্বরোড এলাকার অবরোধের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল করে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা।
বার্তাবাজার/এম আই
