লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে চলাচলের জন্য অসহায় পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা দীর্ঘদিন দখল করে বহুতল ভবন নির্মানের অভিযোগ উঠেছে জয়নাল হোসেন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এতে এই এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়েছেন। এছাড়াও ফুলবানু নামে অসহায় নারীর ৬টি নারিকেল গাছ কেটে ফেলেছেন এবং বিদ্যুতের মিটারও তার দখলে রেখেছেন জয়নাল হোসেন।

সোমবার (৭ নভেম্বর) বিকালে সোনাপুর ইউনিয়নের সিকদার রাস্তার মাথা নামক এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। এঘটনায় ভুক্তভোগীদের পক্ষে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও থানার ওসির বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ফুল বানু (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ স্থানীয় বাসিন্দা।

এছাড়াও গত ৫ অক্টোবর একই এলাকার বৃদ্ধ সায়েদ হোসেন (৫৫) নামের এক ব্যাক্তি বে-দখল হওয়া ৫ শতাংশ জমি জয়নালের কাছ থেকে উদ্ধারে ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তহসিলদার পাঠিয়ে সমস্যা সমাধান করে দেন ইউএনও।

অভিযুক্ত প্রভাবশালী প্রবাস ফেরত জয়নাল হোসেন (৪০) একই গ্রামের রহিম উদ্দিন বেপারি বাড়ীর মৃত, সিরাজ উল্লাহর ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সোনাপুর গ্রামের সিকদার রাস্তার মাথায় রহিম উদ্দিন বেপারি বাড়ির রাস্তা দিয়ে স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক মানুষের চলাচল। এজন্য সোনাপুর মৌজার ৫ দাগের (বর্তমান-৬৬৭) আড়াই শতাংশ জমি অসহায় বৃদ্ধ ফুলবানু সহ পাঁ দিনমজুর পরিবার এবং সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য বরাদ্দও দেয় হয়। যা সরকারি নকশায়ও প্রতিয়মান।

কিন্তু বাড়ির সামনের রাস্তা হওয়ায় অভিযুক্ত জয়নাল হোসেন বৃদ্ধ ফুলবানুর ৬টি নারিকেল গাছ কেটে রাস্তাটি জবর দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ করেন। যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ওই অসহায় পরিবার ও স্থায়ীরা। জবর দখলকারী জয়নাল হোসেনের কবল থেকে চলাচলের রাস্তা উদ্ধারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

সৈয়দ আহাম্মদ, ফুলবানু ও আবদুল আলীসহ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ফুলবানুর চাচা ছবিউল্লাহর কাছ থেকে ৫ কড়া জমি ক্রয় করেন জয়নাল হোসেন। এর সাথে রাস্তাসহ ফুলবানুর আড়াই শতাংশ জমি প্রভাবখাটিয়ে জবর দখল করে নেয় জয়নাল। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জমি না দিয়ে পাশের নালা দিয়ে চলাচলের জন্য দেখিয়ে দেন। কিন্তু জয়নাল ইতোমধ্যে জায়গাটির চলাচল বন্ধ করে দেয়।

এদিকে গত একমাস ধরে ওই রাস্তার জমির উপর জয়নাল জোরপূর্বক ভবন নির্মান কাজ করছেন। এতে চরম বিপাকে পড়েন এ রাস্তায় চলাচলকারী স্থানীয় বাসিন্দারা। তাই অসহায় পাঁচ পরিবার এবং সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য জবরদখলকৃত রাস্তা উদ্ধার দাবী জানান।

বৃদ্ধ ফুলবানুর রাস্তা দখল করে ভবন নির্মাণের বিষয় জানতে চাইলে অভিযুক্ত জয়নাল বলেন, তিনি জমি ও রাস্তা দখল করেননি। গাছ কাটলেও সেগুলো ফুলবানুকে দিয়ে দিয়ছি। স্থানীয় এসহাক খলিফার কাছ থেকে সহসায় জমি ক্রয় করে রাস্তা করে দিব বলেছি। আমার দখলে থাকা বিদ্যু মিটারও সহসায় দিয়ে দিব।

এ ব্যাপারে সোনাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান এডঃ ইউসুফ জালাল কিসমত বলেন, রাস্তা দখল করে ভবন নির্মাণের বিষয়ে জয়নালের বিরুদ্ধে ওই এলাকার কয়েকজন অভিযোগ করেছেন। একজনের সমস্যা সমাধান করা হয়। অসহায় বৃদ্ধ ফুলবানুর স্বামীর জমি ও রাস্তা দিয়ে দিতে জয়নালকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।। রাস্তা দখল করে এতে কেউই ভবন নির্মাণ করতে পারে না।

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনিরা খুতুন বলেন, এসব বিষয়ে লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ আসলে তদন্তকরে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বার্তা বাজার/জে আই