ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় রক্তপাত বন্ধ করা তুরস্কের দায়িত্ব। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখের সামনে যা ঘটছে তা মেনে নেওয়ার মতো না। তবে গাজার ভাইবোনদের কখনও একা ফেলে দেবে না তুরস্ক এমন মস্তব্য করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
রোববার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রিজে প্রদেশে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে গাজাবাসীদের নিয়ে এ আবেগঘন কথা বলেন তিনি। এরদোগান বলেন, ইসরাইলি নিপীড়ন থেকে ফিলিস্তিনিদের রক্ষা করার দায়িত্ব রয়েছে তুরস্কের। আঙ্কারা যা করছে তা আরও অব্যাহত রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, গাজায় এই অনৈতিক, নীতিহীন, ঘৃণ্য গণহত্যাকে যারা সমর্থন করছে তাদের অপরাধের বিরুদ্ধে কথা বলা তুরস্কের ঐতিহাসিক দায়িত্ব। কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে টিআরটি ওয়ার্ল্ড উল্লেখ করেছে, তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিসরি ও জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে গাজার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন।
এর আগে হামলা অব্যাহত রাখায় ও যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হওয়ায় ইসরায়েলে নিযুক্ত নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নেয় তুরস্ক। এমনকি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন করার সিদ্ধান্তও নেয় আঙ্কারা।
শনিবার তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেয়। আঙ্কারা জানায়, রাষ্ট্রদূত ওজকান তোরোনলারকে দেশে ফিরতে বলা হয়েছে ‘গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় সৃষ্টি মানবিক বিপর্যয়’ নিয়ে আলোচনা করার জন্য।
হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে তুরস্কের সঙ্গে আলোচনা করতে রাজধানী আঙ্কারায় যাওয়ার কথা রয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের। মার্কিন মন্ত্রীর সফরের আগ মুহূর্তে ইসরায়েল থেকে রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে তুরস্ক। ফলে নতুন করে কূটনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়েছে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র আর তুরস্কের মধ্যে।
মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ইসরায়েলের সবচেয়ে বেশি সমালোচনা করেছে তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সাম্প্রতিক জনসভা ও সাংবাদিক সম্মেলনগুলোতে ইসরায়েলের কঠোর সমালোচনা করছেন। বারবার আহ্বান জানিয়েছেন যুদ্ধ বিরতির।
তবে ইসরায়েল জানিয়েছে, তেল আবিব ও আঙ্কারার কূটনৈতিক সম্পর্ক এখনো অটুট রয়েছে। ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, গাজা যুদ্ধ নিয়ে আঙ্কারার অবস্থান ও তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহারের পরও তুরস্কের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে তেমন ছেদ পড়েনি।
বার্তা বাজার/জে আই