বান্দরবানের লামায় নিয়মিত ভাড়া ছাড়া অতিরিক্ত ভাড়া দিতে না পারায় বাবার সমতুল্য মুরুব্বি আশিয়োর্ধ বৃদ্ধা রহমত আলীর গায়ের পাঞ্জাবি খুলে নিলো সিএনজি ড্রাইভার মো. আজিজ (৫০)। শনিবার সকাল ৯টায় উপজেলার সরই ইউনিয়নের কেয়াজুপাড়া বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে সংগঠিত ঘটনার ভিডিও রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে মুহুর্তেই ভাইরাল হয় এবং পাষণ্ড সিএনজি ড্রাইভার এর বিচারের দাবিতে নিন্দার ঝড় উঠে।

অভিযুক্ত সিএনজি ড্রাইভার মো. আজিজ পার্শ্ববর্তী লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদের পেছনে বটতলী এলাকার মৃত কালা মিয়ার ছেলে।

জানা যায়, আশিয়োর্ধ বৃদ্ধা রহমত আলীর বাড়ি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলায়। ছোট মেয়েটিকে সরই ইউপির আন্ধারি ইরাকি বাগান এলাকায় বিয়ে দেন। মেয়ের শশুর বাড়িতে শেষমেশ দেখবেন বলে একাই বাড়ি থেকে বের হয়ে লোহাগাড়া হয়ে সিএনজি করে সরই কেয়াজুপাড়া বাজারে পৌঁছালে সিএনজি ড্রাইভার মো. আজিজ (৫০) তার কাছে ভাড়া চায়। কিন্তু মুরব্বি টাকা নাই বলিলে ক্ষিপ্ত হয়ে সিএনজি ড্রাইভার কিছুক্ষণ বকাবকি করার পর গায়ের পাঞ্জাবি খুলে নেয়। এসময় বৃদ্ধার হাতে থাকা অল্পাংশ নাস্তার পুটলিটাও কেড়ে নেয় ড্রাইভার আজিজ। তাতেও ক্ষান্ত না হয়ে পরনের পায়জামা খুলতে বলেন। পরে অবস্থা ব্যাগতিক দেখে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা স্থানীয় মোটরসাইকেল ড্রাইভার মো. সাকিব (২২) ও অপরজন রায়হান নিজের পকেট থেকে ভাড়া দিয়ে বৃদ্ধার সম্মান রক্ষায় এগিয়ে আসেন।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত সিএনজি ড্রাইভার মো. আজিজ বলেন, সকালে প্রথম টিপ ভাড়া নিয়ে গেলাম। ওই বৃদ্ধ ভাড়ার টাকা নেই আগে বলেনি। তাই নিজেকে সংযত রাখতে পারিনি। লোহাগাড়া উপজেলার অটোরিকশা সিএনজি চালক কল্যাণ সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি মো. রাসেল বলেন, ফেসবুকে ভিডিও দেখার পর বিষয়টি জানতে পারি। সামান্য টাকার জন্য বৃদ্ধ লোকটিকে এভাবে অপমান করা ঠিক হয়নি।

কেয়াজুপাড়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. সেলিম বলেন, বর্বর ওই সিএনজি ড্রাইভারের বিচার হওয়া দরকার। তার উপযুক্ত বিচার না হলে তাকে এই রোডে গাড়ি চালাতে দেয়া হবেনা।

এই বিষয়ে সরই ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিস কোম্পানি বলেন, ভিডিওটি দেখেছি এবং ঘটনাটি অনেকে জানিয়েছে। সিএনজি চালক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে বসে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে ওই বৃদ্ধ লোকটি এই এলাকায় নতুন। তাকে সঠিকভাবে কেউ চিনতে পারছেনা। পুরো পরিচয় জানা যায়নি। তবে খোঁজখবর নেয়ার চেষ্টা চলছে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি ভাইরাল হওয়ার পরপরই লোহাগাড়া থেকে সরই কেয়াজুপাড়া বাজারের সিএনজি ভাড়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে জনসাধারণ। ১৬ কিলোমিটার সড়কে প্রতিজন যাত্রীকে দিতে হয় ৯০ টাকা ভাড়া যা অনেকবেশি ও জুলুম বলে দাবি করেন ভুক্তভোগ যাত্রীরা। তারা বলেন, লোহাগাড়া সিএনজি সমিতি মানুষের উপর জুলুম করছে।

বার্তাবাজার/এম আই