কৃষি প্রধান বাংলাদেশে এক সময় লাঙল ও গরুর হাল ছাড়া কৃষি জমি প্রস্তুতের কথা চিন্তাই করা যেত না। কিন্তু কালের পরিক্রমায় হারিয়ে গেলেও গ্রাম বাংলার এ অতীত ঐতিহ্য ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গ্রামগুলোতে এখনও দেখা যায়।

বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে গরু, লাঙল ও জোয়াল। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হালচাষের পরিবর্তে এখন ট্রাক্টর অথবা পাওয়ার টিলার দিয়ে অল্প সময়ে জমি চাষ করা হয়।

এই অত্যাধুনিক যুগেও আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের পানিপাড়া গ্রামের মাঠে আবু সালাম মোল্যা (৬০) নামে এক বৃদ্ধের লাঙল-গরু দিয়ে হালচাষ করার চিত্র চোখে পড়ে।

পেশাদার হাল মালিক আবু সালাম মোল্যা জানান, হাল চাষের জন্য এক জোড়া বলদ গরু, লাঙ্গল-জোয়াল, মই, গরু তাড়ানোর লাঠি, গরুর মুখের টোনা লাগে। পাওয়ার ট্রিলারের আগমনে গরু দিয়ে হালচাষ হয়না বললেই চলে। গ্রামীণ সমাজের অনেকেই গরু পালন ছেড়ে দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, এক সময়ে অন্যের জমিতে হালচাষ করে পরিবারের ভরণ-পোষণ করতেন। পূর্বপুরুষের এই পেশা ছাড়েননি তিনি। এখন নিজের জমিতে হাল চাষ করেন।

আলফাডাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মনিরুল হক সিকদার বার্তা বাজার’কে বলেন, ‘সময়ের সাথে সাথে বাংলাদেশে কমছে কৃষি জমি। এক সময়ের কৃষকের নিত্য দিনের সঙ্গী লাঙল, জোয়াল ও মই এসব হয়তো এক সময় চির বিশ্রামে গিয়ে জাদুঘরে স্থান পাবে আর পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বাংলার কৃষি যুগের গৌরব মনে করিয়ে দেবে।’

আলফাডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার সাহা বার্তা বাজার’কে জানান, ‘গরু-মহিষ, লাঙল ও জোয়াল ছিলো আমাদের ঐতিহ্য ও পরিবেশবান্ধব কৃষি পদ্ধতি। গরুর লাঙলের মাধ্যমে চাষাবাদে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। তবে লাঙলের হাল দিয়ে জমি চাষে অনেক সময় ব্যয় হয় কৃষকের। এখন প্রযুক্তিতে অল্প সময়ে অনায়াসে জমি চাষ করতে পারেন কৃষক।’

বার্তাবাজার/এম আই