সারা দেশের ন্যায় টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় টানা দুইদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে ডুবে গেছে পুকুর, ফসলের মাঠসহ নিচু এলাকার ছোট-বড় বিভিন্ন সড়ক। ফলে পুকুরের মাছ ভেসে যাচ্ছে লোকালয়ে। ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ। মাছ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। বুকভরা হতাশা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কাটছে দিন। অর্ধাহারে- অনাহারে দিন পার করতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষের।

উপজেলার ধলাপাড়া, আশারিয়াচালা, রসুলপুর, সাগরদিঘি, লক্ষিন্দর ও ফটিয়ামারিসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাছ চাষিদের অনেক পুকুর ডুবে গেছে। ভেসে যাচ্ছে চাষ করা সব মাছ। রুই কাতল, চিতল, পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া, সিং, সরপুঁটি ও মাগুরসহ বিভিন্ন জাতের মাছ ভেসে যাচ্ছে লোকালয়ে। কলার বাগান ও স্কুল মাঠে মিলছে দেশীয় ও চাষ করা পুকুরের মাছ।এতে কিছু উৎসুক জনতা আনন্দ-উল্লাসের সাথে সকাল থেকেই মাছ শিকারে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এমন এক মাছ শিকারী সাগরদিঘি এলাকার মো. জুয়েল রানা বলেন, পানি বেশি হওয়ায় পুকুর থেকে ভেসে আসা তেলাপিয়া, রুই, কাতল ও সরপুঁটি মাছ বেশি পেয়েছি । সকাল থেকে সারাদিনে ৭- ৮কেজি মাছ ধরেছি। সড়ক ডুবে পানি প্রবাহিত হওয়া
স্রোতে জাল ফেলে হঠাৎ মাছ ধরতে খুব আনন্দ উপভোগ করছি।

কৃষকরা বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই শুরু হওয়া বৃষ্টিতে যে পরিমান পানি হয়েছে বছরের মধ্যে এমন পরিমান বৃষ্টি হয়নি। এমন পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ার পাশাপাশি রোপা আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও টানা বৃষ্টির কারণে সবজি খেতও ক্ষতির মুখে পড়েছে।

এদিকে উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, উপজেলায় ভারি বাষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে প্রায় দুই শতাধিক পুকুর। এতে সম্ভাব্য ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

লক্ষিন্দর এলাকার মাছ চাষি মজিবুর রহমান বলেন, আমি এ বছর ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুরে মাছ চাষ করেছিলাম। মাছগুলো বেশ বড় হয়েছিল। অতি বৃষ্টিতে পুকুর তলিয়ে মাছ লোকালয়ে ভেসে গেছে। এতে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোছা. খাদিজা জানান, ভারী বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে সরকারি ছুটি থাকার কারণে কতটি পুকুর ডুবেছে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে দুই শতাধিক পুকুর ডুবতে পারে। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলেই তালিকা করে বলতে হবে।

বার্তাবাজার/এম আই