নোয়াখালীর হাতিয়ায় পাওনা টাকা আদায়ের দাবী সহ অন্যদের সচেতন করতে নিজের টাকা খরচ করে মাইকিং করেছেন জাহিদুল ইসলাম নামে এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী।
বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে হাতিয়া উপজেলার প্রধান সড়কে একটি সিএনজিতে মাইকিং করতে দেখা গেছে ভুক্তভোগী জাহিদুল ইসলামকে।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জাহিদুল ইসলাম জাহাজমারা ইউনিয়নের জয়নাল আবেদীনের ছেলে। সে বর্তমানে কর্মসংস্থানে কারণে হাতিয়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডে বসবাস করছেন।
মাইকিং করার সময় জাহিদুল ইসলাম সবাইকে সতর্ক করে বলেন, হাতিয়া পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের মৃত গাজী মেম্বারের ছেলে রাজু থেকে সাবধান। রাজু আল আরাফাহ ব্যাংকের লোন নিয়ে দুইটি কিস্তি বাকী রয়েছে মর্মে তার থেকে টাকা ধার চায়। জাহিদুল ৬ মাস আগে রাজুকে ১৪ হাজার টাকা ধার দেয়। দীর্ঘদিন পরেও পাওনা টাকা না পেয়ে টাকার পাওয়ার দাবীতে আজ বিকেলে মাইকিং করে রাজু বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক করেন। মানুষ থেকে ব্যবসা বানিজ্যের কথা বলে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়। পরে কাউকে আর টাকা পয়সা দেয় না। আসলে তার কোনো ব্যবসা নেই। মানুষকে ধোঁকা দিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে টাকা আত্মসাত করাই মূলত রাজুর উদ্দেশ্য।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, পাওনা টাকার জন্য হাতিয়া থানার দ্বারস্থ হলে থানা পুলিশ পর্যায়ক্রমে ১৩ হাজার টাকা উদ্ধার করে দেয়। এখনো এক হাজার ৩শত টাকা পাওনা আছি। আমার মত অনেকে টাকা পাওনা আছে। তবে নতুনকরে যেন আর কেউ তার প্রতারণার ফাঁদে না পড়ে সে জন্য মাইক ভাড়া করে সকলকে সচেতন করছি। যে সিএনজি দিয়ে মাইকিং করছি সেই ড্রাইভারও টাকা পাওনা আছে।
সিএনজি চলক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি সিএনজির চাকা লাগানোর জন্য বাড়ি থেকে টাকা এনেছি, সে হঠাৎ করে আমাকে এসে বলতেছে ভাই আমি ব্যাংক থেকে নতুন করে ১লক্ষ টাকা লোন নিয়েছি, তবে আমার একটা কিস্তি বাকি রয়েছে এটা পারশোধ করলেই আমি টাকাটা পেয়ে যাবো। আমাকে ৫হাজার টাকা দেন, আমি বিকেলে আপনার টাকা পরিশোধ করে দেবা। আমার কাছে ৪হাজার ২শত টাকা ছিলো সেটাই আমি তাকে দিয়ে দিয়েছি। সে টাকাটাও আজ পর্যন্ত ফেরৎ দেয়নি। অনেকের কাছে গিয়েছি কেউ সমাধান করেনি। তাই আজ বাধ্য হয়ে মাইক নিয়ে নেমেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, রাজু অনেকের থেকে জরুরি প্রয়োজন দেখিয়ে কয়েকদিনের জন্য টাকা হাওলাত চায়। তার অনুনয় বিনয়ের কারণে টাকা ধার না দেওয়ার উপায় থাকেনা। পরে নির্দিষ্ট সময়ে টাকা ফেরৎ চাইলে সে সময় ক্ষেপন করে। প্রতিটি পাওনাদারকে কয়েকবার তারিখ দিয়েও টাকা না দিয়ে মোবাইল বন্ধ রেখে পলাতক থাকে। পারিবারিক ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় অনেকে ভয়ে তেমন কিছু বলতে পারেনা।
তাদের মধ্যে একজন হাতিয়া দ্বীপ নিউ মার্কেটের ব্যাবসায়ী মাও: আজহার। তিনি বলেন, সে মাছের ব্যাবসা করে, হঠাৎ আমার কাছে এসে বলে ভাই মোকামে মাছ পাঠানোর জন্য আমি মাছ বেশী কিনে পেলেছি, আমার কিছু টাকার দরকার আপনাকে দুদিন পরে দিয়ে দিবো। আজকে প্রায় ৪ মাস হয়ে গেছে। এর মধ্যে কয়েক শতবার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছে। এখনো ২৮ হাজার ৫শত টাকাটা পাইনি।
বার্তা বাজার/জে আই