জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের পুলিশের দায়ের করা মামলায় বিএনপির ৫ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি শহিদুল্লাহ সরকার (৫২), পৌর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনির খান লোহানী (৪০), পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানা খোকন (৩৫), বেলগাছা ইউনিয়নের ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি আব্দুর রশিদ (৫০) এবং পাথর্শী গ্রামের মৃত ছবর আলী শেখের ছেলে বিএনপির কর্মী মোহাম্মদ ধলা শেখ (৫২)।

শুক্রবার (১৯ মে) দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের ইসলামপুর থানা পুলিশ আদালতে হাজির করলে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সংশ্লিষ্ট বিচারক। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দিবাগত রাত ৯টার থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের নাশকতার পরিকল্পার পুরনো মামলার আসামি করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছেন গ্রেপ্তারকৃতরা মামলার এজাহারভূক্ত আসামি না হলেও তারা মামলায় উল্লেখিত ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত।

থানা হাজতে থাকাবস্থায় পৌর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনির খান লোহানী বলেন, ‘ইসলামপুর পুরাতন মার্কাস মসজিদে এশার নামাজ পড়ে বের হওয়ার মাত্রই বিনা ওয়ারেন্টে আমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।’

থানা হাজতে থাকাবস্থায় বেলগাছা ফকিরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমার নামে কোনো মামলা নেই। কিন্তু গভীর রাতে ঘুম থেকে ডেকে তোলে পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করেছে।

এ বিষয়ে ইসলামপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নবাব বলেন, ‘এজাহারভূক্ত আসামা না হলেও পুলিশ আমাদের ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।’

ইসলামপুর থানা সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়েরকৃত ২৪ নম্বর মামলায় বিএনপি নেতা শহিদুল্লাহ সরকার এবং যুব দলনেতা মনির খান লোহানীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তবে তারা এজাহারভুক্ত আসামি নন।

এছাড়া গত ১৪ ফেবুরুয়ারি বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়েরকৃত ১৩ নম্বর মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বিএনপি নেতা আব্দুর রশিদ, মোহাম্মদ ধলা শেখ এবং যুব দলনেতা সোহেল রানা খোকনকে।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও ইসলামপুর আসনের সাবেক এমপি সুলতান মাহমুদ বাবু বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত বিএনপির ওইসব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নতুন কোনো মামলা নেই। জামিন অযোগ্য পুরাতন গায়েবি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদাল পাঠিয়েছে পুলিশ।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সুলতান মাহমুদ বাবু আরও বলেন, ‘আগামীকাল শনিবার ২০ মে বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের লক্ষ্যে জেলা বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মাঝে এক ধরনের ভয়-ভীতি সঞ্চার করতেই এ গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। নেতাকর্মীদের গভীর রাতে ঘুম থেকে ডেকে তোলে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। গ্রেপ্তরকৃতদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।’

ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, ‘অযথা কাউকে গ্রেপ্তার করা হয় না। গ্রেপ্তারকৃতদের বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।’

বার্তাবাজার/এম আই