ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে দলিল জালিয়াতের মাধ্যমে অতিরিক্ত সম্পত্তি নামজারি ও জমাখারিজ করার অভিযোগে করেছে বড় ভাই। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন মোঃ জুয়েল খান। জুয়েল খান আখাউড়া পৌর শহরের তারাগন গ্রামের মৃত নূর মোহাম্মদ খানের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জুয়েল খান বলেন, নাহিদ খান ও তিনি একই মায়ের সন্তান। তবে তাদের পিতা দুইজন। শিশুকালে জুয়েলের পিতার মৃত্যু হলে তার মা অজুফা বেগম আপন চাচা খোকন খানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এই সংসারে নাহিদ খান ও ৫ বোন রয়েছে। ২০২২ সনের ১৬ জুলাই খোকন খান মৃত্যু বরণ করেন। জুয়েল খানের অভিযোগ তার সৎ বাবা খোকন খান মৃত্যুর আগে আখাউড়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসে একখানা অছিয়তনামা দলিল রেজিষ্ট্রি করে যান। সম্প্রতি জুয়েলের ছোট ভাই নাহিদ খান জুয়েল খানকে পিতার সম্পত্তি হতে বঞ্চিত করার অসৎ উদ্দেশ্যে উক্ত অছিয়ত নামা দলিলের দাগ ও চৌহদ্দির দুটি পাতা বাদ দিয়ে নতুন ২টি পাতা সংযোজন করে জালিয়াতির মাধ্যমে রেজিষ্ট্রি অফিসের নকল সীল বানিয়ে একটি জাল দলিল সৃষ্টি করে। ভূমি অফিস থেকে নাহিদ খানের হিস্যার অতিরিক্ত ভুমি নামজারি ও জমাখারিজ করে নেয়। জুয়েল খান বিষয়টি জানতে পেরে এসব জালিয়াতির বিষয়ে আখাউড়া সহকারী কমিশনার ভুমি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। জুয়েল খান আরও অভিযোগ করেন নাহিদ খান তাকে ভয়ভীতি ও প্রান নাশের হুমকি দিয়ে আসছে।
এ ব্যপারে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে নাহিদ খান বলেন, বড় ভাইয়ের মাধ্যমে তার পরিচিত লোককে নামজারি করার দায়িত্ব ছিয়েছিলাম। তিনি কোন কাগজপত্র পরিবর্তন করেছি কিনা আমি জানি না। হুমকি দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে তিনি জানান।
নামজারির আবেদনটি কে করেছেন জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের সহকারী মোঃ আহাদ বলেন, আবেদনটি কে করেছে আমি জানি। তবে নামজারির সরকারি ফি (ডিসিআর) প্রদান করেছেন নাহিদ খান।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার সাইমন ইমতিয়াজ বলেন, অছিয়ত নামাটি আমার আগের অফিসারের আমলে হয়েছে। দলিলের পাতা পরিবর্তনের বিষয়ে জুয়েল খানের মৌখিক অভিযোগ পেয়ে নাহিদ খানকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। নাহিদ খান বলেছে, সে ৩য় পক্ষের মাধ্যমে জমা খারিজ আবেদন করেছেন। জালিয়াতির বিষয়টি সে জানে না। তবে জুয়েল খান আমাকে মূল অছিয়ত নামা এবং নামজারির দলিলটি দেখিয়েছে। সেখানে দুটি স্ট্যাম্পের পাতার সিরিয়াল নম্বরে মিল নাই। এবং খাতের লেখাও আলাদা।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অংগ্যজাই মারমা বলেন, নামজারি সংক্রান্ত জুয়েল খানের একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি যাচাই করে দেখার জন্য সাব রেজিষ্ট্রারকে বলেছি। তারপর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
বার্তা বাজার/জে আই