নরসিংদীতে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী ও ১৬ মাস বয়সী শিশু সন্তানকে হত্যার দায়ে স্বামী ফখরুল ইসলাম (৩১) কে মৃত্যু দন্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুরে নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক শামীমা পারভীন এই আদেশ দেন।

মৃত্যু দন্ডাদেশপ্রাপ্ত ফখরুল ইসলাম নরসিংদী সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের ঘোড়াদিয়া গ্রামের মো: সাইফুল্লাহর ছেলে।

মামলার বরাত দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এম. এ. এন অলিউল্লাহ জানান, ২০১৯ সালে নরসিংদী শহরের পূর্ব দত্তপাড়া মহল্লার মো. পারভেজ মিয়ার মেয়ে রেশমী আক্তারের সাথে ঘোড়াদিয়া এলাকার ফখরুল ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্যজীবনে এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর কাজকর্ম না থাকায় প্রায়শ: স্ত্রী রেশমীর নিকট টাকা পয়সা চাইতো স্বামী ফখরুল ইসলাম। টাকা না দিলে স্ত্রী রেশমীকে মারধর করতো সে। রেশমীকে শারীরিক নির্যাতন থেকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন সময়ে স্বামী ফখরুলকে টাকা পয়সা দিয়ে আসছিলেন পরিবার। স্বামী বেকার থাকায় তাদের সংসারে কলহ লেগে থাকতো।

২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর রাত ৩ টার দিকে গৃহবধূ রেশমী আক্তার ও তার ১৬ মাস বয়সী সন্তানের গোঙ্গানীর শব্দ শুনতে পান পরিবারের সদস্যরা। এসময় বাড়ির লোকজন ওই ঘরের দরজায় নক করলে দরজা খুলে পালিয়ে যায় স্বামী ফখরুল ইসলাম। পরে বাড়ির লোকজন ঘরে ঢুকে খাটের উপর স্ত্রী রেশমী আক্তার ও তার ১৬ মাসের ছেলে সন্তানের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ দুইজনের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ওই রাতেই স্থানীয়দের সহায়তায় অভিযুক্ত ফখরুলকে আটক করে পুলিশ। এসময় পুলিশের নিকট চাকু দিয়ে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করে পাষন্ড স্বামী ফকরুল। এ ঘটনায় নিহত রেশমীর বাবা মো. পারভেজ মিয়া বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি স্বামী ফখরুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। আদালত আসামীর জবানবন্দী গ্রহণসহ ১৩ কার্য দিবসে ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামী ফখরুল ইসলামকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত‍্যূদন্ডের আদেশ দেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক। একই সাথে আসামী ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ডও প্রদান করা হয়।

বার্তা বাজার/জে আই