মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন নদের ভাঙনের আতংকে দিন কাটাচ্ছে জেলাবাসী। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ কেউ আবেদন করলে তাদের আশ্রায়নসহ সার্বিক সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন মাদারীপুর জেলা প্রশাসন।

মাদারীপুর জেলার ৩টি উপজেলার ৪টি নদ-নদীর ১৫ স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে অনেকেই হারাচ্ছেন তাদের ভিটা বাড়ি। নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলী জমি। ভাঙন রোধে মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরীভাবে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করেছে।

জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের জাফরাবাদ গ্রামের মালাই সরদার। ১০৫ বছর বয়সে বারবার শিকার হয়েছে নদী ভাঙনের। এমনকি সহধর্মিনী ৮৫ বছরের ফুলজান বিবিও স্বাক্ষী নদী ভাঙনের। এই দম্পত্তি ৩ বার নদী ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে সদর উপজেলার জাফরাবাদ এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদের পাড়ে গড়েছিল নিজেদের বসতি। জীবনের শেষ বয়সে এসে আবারও ভাঙনের শিকার হয়ে সর্বস্ব হারানোর দ্বারপ্রান্তে পরিবারটি। বাড়ির সামনে নদীর পারে বসে সর্বনাশা আড়িয়াল খাঁর ভাঙন দেখছে বাকরুদ্ধ হয়ে। বুকের গভিরে অনেক অভিমান অভিযোগ থাকলেও বাধরুদ্ধ এই পরিবারের মুখে যেন কোন ভাষা নেই। বারবার ভাঙনের কথা আর সরকারের কাছে সাহায্য চাওয়া ছাড়া কিছু বলতে পারছেনা মালাই সরদার ও ফুলজান বিবি। স্থায়ীভাবে নদী ভাঙনরোধে সরকার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এমনটাই দাবি ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের।

শুধু মালাই সরদার আর ফুলজান বিবিই না। মাদারীপুর জেলার ৩ টি উপজেলার শত শত পরিবার পড়েছে ভাঙনের মুখে। নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলী জমি। জেলা সদর, রাজৈর ও কালকিনি উপজেলায় আড়িয়াল খাঁ নদ, আপার কুমার নদ, লোয়ার কুমার নদ ও টরকী নদীর ১৫টি স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন। ভাঙনের কবলে পরে দিশেহারা অনেক পরিবার। নদী ভাঙ্গন রোধে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন নদী ভাঙনের শিকার পরিবার।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সানাউল কাদের খান বলেন, জরুরী ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ করা যাবেনা। এজন্য বড় আকারের প্রকল্প করে রোধ করতে হবে নদী ভাঙন।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান জানান, নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোকে আশ্রয়ণসহ সকল ধরণের সাহায্য করা হবে।

বার্তাবাজার/এম আই