জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যায়। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেও তেমনটাই দেখা যাচ্ছে। অনেক দলই ১৪ দলীয় জোটে ভিড়তে চায়। কিন্তু শরিক বাড়াতে চায় না আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন এই জোট। তবে ১৪ দলের সমর্থনে সমমনা জোটের সংখ্যা বাড়ছে।

১৪ দলের সাবেক সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমের সময় জোটের মধ্যে নানা অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল। শরিকদের মধ্যে বাকযুদ্ধ হয়েছে অনেকবার। জোট ছাড়ার ঘোষণাও দিয়েছিলেন কেউ কেউ। শরিকদের নানা অভিযোগ ও আক্ষেপ ছিল নিয়মিত বিষয়।

বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের হাসানুল হক ইনু এই জোটের অন্যতম শরিক। ২০১২ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সরকারের তথ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। জানা গেছে, জোটের শরিকদের থেকে কেউ আর মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি। এটি জোটের শরিকদের অন্যতম আক্ষেপ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জোটের কেউ মন্ত্রিত্ব পাবেন কিনা তাও এখনো সুস্পষ্ট নয়।

মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর ১৪ দলীয় জোটের দায়িত্ব পান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু।

জোটের শরিকরা মনে করেন, প্রবীণ এই নেতার নেতৃত্ব ১৪ দলকে এমন এক জায়গায় নিয়ে গেছে যে এখন কেউ জোট ছাড়ার কথা বলেন না। বরং জোটে আসতে চায়।

তবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যারা জোটে আসতে চান, তাদের বিষয়ে আপত্তি রয়েছে অনেক শরিক দলের।

মিছবাহুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশ, সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদীর নেতৃত্বাধীন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এবং আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জীরনেতৃত্বাধীন খেলাফত আন্দোলন ১৪ দলে আসার আগ্রহ জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
এ বিষয়ে ১৪ দলের শরিক সাম্যবাদী দলের সভাপতি দিলীপ বড়ুয়া বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে অনেকে জোটে আসতে চায়। অনেক দল এবং অনেক জোটই আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমরা সেখানে আপত্তি জানিয়েছি।

তার মতে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের হিসেবে ১৯ বছর ধরে আছে ১৪ দলীয় জোট। সেখানে নতুন করে যদি কেউ ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল’ হিসেবে আবির্ভূত হতে চায়, সেটা আপত্তিজনক।

জানা গেছে, কিছু ইসলামিক দল এবং এর বাইরে কিছু ছোট দল চলতি বছরের শুরু থেকে জোটে আসার চেষ্টা করছে।

মিছবাহুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশ, সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদীর নেতৃত্বাধীন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এবং আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জীরনেতৃত্বাধীন খেলাফত আন্দোলন ১৪ দলে আসার আগ্রহ জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জোটে যোগ দিতে তাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন এসব নেতা।

অনেকেই আসতে চায়। কিন্তু ১৪ দলকে আর বাড়ানো হবে না। সহযোগী হিসেবে অন্যান্য জোট হচ্ছে।
—আমির হোসেন আমু, সমন্বয়ক, ১৪ দল বিষয়টি ১৪ দলের সভায়ও তোলা হয়। চলতি বছরের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত বেশ কয়েকবার এসব বিষয় আলোচনার টেবিলে তোলে ১৪ দল। কিন্তু শরিক বাড়ানোর বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন অনেকে। জানা গেছে, ইসলামিক দল ও জোটের বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন জোটের শরিক বাম নেতারা এবং খেলাফত মজলিস।

শেষ পর্যন্ত জোটে শরিক বাড়ানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌছে ১৪ দল। জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুড বলেন, অনেকেই আসতে চায়। কিন্তু ১৪ দলকে আর বাড়ানো হবে না।

যারা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটে আসতে আগ্রহী তাদেরকে দিয়ে আলাদা জোট করা হচ্ছে বলেও জানান আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, তাদেরকে আলাদা আলাদা জোট করানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে কিছু জোট আত্মপ্রকাশ করেছে আমাদের সমর্থনে। আরও দুই একটা করবে।

আমু বলেন, ১৪ দল ১৪ দলই থাকবে। সহযোগী হিসেবে অন্যান্য জোট হচ্ছে।

বার্তা বাজার/জে আই