মাদারীপুরের রাজৈরে ডেঙ্গু রোগীরা সরকারি ঔষধ পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিনতে হয় বাহিরের বিভিন্ন ফার্মেসী থেকে। হাসপাতালে ঔষধ না দেওয়ায় গরিব অসহায় মানুষদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীদের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে এ অভিযোগ পাওয়া যায়। তবে আরএমও’র দাবি, রোগীদের প্রয়োজনীয় বেশিরভাগ ঔষধ হাসপাতাল থেকেই দেওয়া হয়।

বিনা খরচে ভালো চিকিৎসা সেবা পাওয়ার জন্য মানুষ সরকারি হাসপাতালে যান। এদের মধ্যে অধিকাংশই গরিব, অসহায় ও আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবার। কিন্তু এখানে এসেও গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। যেকোনো পরিক্ষা- নিরিক্ষার জন্য সাধারণ রোগীদের যেতে হয় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিকে। হাসপাতালে ভর্তির সময় থেকে শুরু করে ছাড়পত্র পাওয়ার আগ পর্যন্ত সকল ঔষধ বাহিরের ফার্মেসী থেকে কিনতে হয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রায় দেড় মাস যাবত হাসপাতালে নরমাল স্যালাইন নেই। শুধু জ্বর, গ্যাস, ব্যথার ঔষধ দিয়ে চলছে চিকিৎসা ব্যবস্থা। এজন্য ভোগান্তিতে পড়েছে ডেঙ্গু রোগী ও তাদের স্বজনেরা। বাহিরের ফার্মেসী থেকে স্যালাইন কিনতে হচ্ছে তাদের। সোমবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ১৩ জন ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছে। ১-৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ২৫ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ২১ জন চিকিৎসাধীন আছে। এদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ, ৬ জন মহিলা, একজন বালক, একজন বালিকা ও একটা বাচ্চা রয়েছে। এছাড়া তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।

শিল্পী বেগম নামে একজন অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে ডেঙ্গু রোগী। তিনদিন যাবত হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এর মধ্যে শুধু জ্বর ও গ্যাসের ঔষধ ছাড়া হাসপাতাল থেকে আর কোন ঔষধ দেয় নাই। ডাক্তারের লেখা সব ঔষধ বাহিরের থেকে কিনে আনা লাগে।

রফিকুল হাওলাদার নামে আরেকজন বলেন, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হওয়ায় শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে ভর্তি করেছি। এই পর্যন্ত দুই-একটা বাদে সকল ঔষধ বাইরের ফার্মেসী থেকে কিনে আনতে হয়।

লাবনী বেগম নামে আরো একজন বলেন, ডাক্তার লেইখা দিছে সব ঔষধ বাহিরের থেকে কিনা আনছি। হাসপাতাল থেকে শুধু একটা খাবার স্যালাইন দিছে। এছাড়া ডাক্তার আরেকটা স্যালাইন লেইখা দেছে, কেনার জন্য অনেক দোকানে খুঁজছি কিন্তু কোন দোকানে পাইতেছি না।

নার্সিং সুপার ভাইজার বিভা রানী বাড়ৈ জানান, জুলাই ২০ তারিখ থেকেই নরমাল স্যালাইনের সাপ্লাই নাই। তাই ডেঙ্গু রোগীদের স্যালাইন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আপাতত প্যারাসিটামল ও গ্যাসের ঔষধ দিতে পারছি।

ঔষধের ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. অপূর্ব মল্লিক বলেন, বর্তমানে স্যালাইনের সাপ্লাই না থাকায় রোগীদের দেওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া অধিকাংশ ঔষধ হাসপাতাল থেকে দেয়া হয়। শুধু ডাক্তার ও রোগীদের পছন্দ মতো ঔষধ লিখলে সেগুলো আমাদের কাছে না থাকার কারণে ফার্মেসী থেকে কিনে আনতে হয়। কিন্তু আমি কখনো লিখি না।

বেশিরভাগ রোগী কোন ঔষধই পায় না কেন? প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমাদের চাহিদা অনুযায়ী ঔষধ কম পাওয়ায় আমরা লিমিট করে দেই। এজন্য অনেক সময় দেখা যায় যারা আগে আসে তারা ঔষধ পায়, আর যারা পরে আসে তারা পায় না।

এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনা নুসরাত জাহানের কাছে জানতে গেলে তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি দেখবো।

বার্তাবাজার/এম আই