বাংলার আকাশে-বাতাসে সরকার পতনের ঘণ্টা বাজছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক নুর।

তিনি বলেন, আগামী ২ মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ,তাই জনগণকে বলবো দেশ রক্ষার রাজপথে নামুন। মনে রাখবেন, এই সরকার যদি এবারও অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসে তাহলে আগামী ২০ বছরের জন্য বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠিত হবে।

শুক্রবার রাজধানীতে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নুর বলেন, দেশ যখন একটা গণঅভ্যুত্থানের দ্বারপ্রান্তে, ১৪ বছরের ভোটাধিকার বঞ্চিত ছাত্র-যুবকরা যখন আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমেছে তখন অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে সরকার ছাত্রলীগকে দিয়ে কথিত ছাত্রসমাবেশ করাচ্ছে। জোরজবরদস্তি করে, হুমকি-ধামকি দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, গার্মেন্টস, দোকান বন্ধ করে এই সমাবেশে নিয়ে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, ঐ কথিত ছাত্রসমাবেশ থেকে দেশের লাখ লাখ বেকার ছাত্র-যুবকদের কর্মসংস্থান নিয়ে কোন বক্তব্য আসেনি, চাকরির বয়স বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনকারী ছাত্র-যুবকদের নিয়ে কিছু বলা হয়নি। গত ১৪ বছরে ছাত্রলীগের হাতে ৪৮ জনের প্রাণ গেছে, ছাত্রলীগের হাতে বুয়েটের আবরার, ঢাবির আবু বক্কর, হাফিজ, চবির দিয়াজ, ঢামেকের রাজিব, পুরান ঢাকার নিরীহ দর্জি বিশ্বজিৎতের রক্ত। ছাত্রলীগ এখন আর কোন ছাত্রসংগঠন নয়, খুনীদের সংগঠন। গত ১৪ বছরে ছাত্রলীগের ১৪টি ভালো কাজ দেখাতে পারবেন না। কিন্তু ১৪ শ খারাপ কাজের দৃষ্টান্ত আছে।

নুর অভিযোগ করেন, এই কথিত ছাত্রসমাবেশের নামে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে গণআন্দোলন দমাতে ছাত্রলীগ, যুবলীগকে সহিংসতা, বিশৃঙ্খলার উস্কানি দিয়েছে। প্রশাসনের কতিপয় দুর্বৃত্তকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে। কিন্তু বাংলার আকাশে-বাতাসে আজ ফ্যাসিবাদের পতনের ঘণ্টা বাজছে।

নুর আরও বলেন, বিরোধী আন্দোলন দমাতে সরকার গণ গ্রেফতার শুরু করেছে, কারাগারগুলোতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি আসামি আটকে অমানাবিক পরিবেশে রেখেছে যাতে তারা বেরিয়ে আর রাজনীতি না করে। কিন্তু জেল থেকে বেরিয়ে কেউ রাজনীতি করবে না এমন কথা বলেনি, বরং ফ্যাসিবাদের পতন না ঘটিয়ে তারা ঘরে ফিরবে না জেল থেকে বেরিয়ে এ কথা বলছে।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, এদেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। জনগণ রাজপথে নেমে এসেছে, সেপ্টেম্বরেই আওয়ামী লীগের পতন হবে। রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ডিএমপি কমিশনারকে জিগ্যেস করেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ কী করবে? এই প্রশ্নের মধ্যে অনেক রহস্য আছে? জনগণের আন্দোলনে পুলিশ যদি বাধা দেয়, মানুষের বুকে গুলি করে, হত্যা করে, তাহলে ‌র‌্যাবের মত পুলিশের উপরেও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। তবে আমরা চাই, পুলিশ প্রশাসন জনগণের পাশে থাকুক। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাশিত নয়। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব কেন এতো ভয় পাচ্ছেন যে, ক্ষমতার পরিবর্তন হলে একরাতেই তারা শেষ হয়ে যাবে? কি এমন অপরাধ করেছেন যে, এতো শেষ হওয়ার আতঙ্ক রয়েছেন? ক্ষমতার পরিবর্তন হলে কোন গুম খুন, অত্যাচার হবে না। আওয়ামীলীগের ভয়ের কোন কারণ নেই। তাদের পতনের পরে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব।

বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুনের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসানের সঞ্চালনায় যুব সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ,আব্দুজ জাহের, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারিকুল ইসলাম,যুব অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম,শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুহেল রানা সম্পদ,পেশাজীবী অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সামসুল ইসলাম প্রমুখ।

বার্তা বাজার/জে আই