মন্ত্রিসভার সদস্য আর সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ফের সরব হলেন শিল্পপ্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। দৈনিক যুগান্তরকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নানা বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তিনি। প্রতিমন্ত্রীর কাছে পত্রিকাটির প্রশ্ন ছিল, পণ্যমূল্য সামাল দেওয়া তো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ। মন্ত্রণালয় তাহলে কী করছে। মন্ত্রণালয় কি সরকার ও জনগণকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে? জবাবে কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, এটা বাণিজ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করুন। তার নিজেরই তো ব্যবসা আছে। তারপর খাদ্যমন্ত্রীর আছে। খাদ্যমন্ত্রী নিজেই চাল মিলের মালিক। আড়তের মালিক।
যুগান্তরের প্রশ্ন ছিল, আপনি বলেছেন, দেশে চাল, ডাল, চিনি, তরকারি কোনো কিছুর অভাব নেই। কিন্তু বাজারে গেলে মানুষ কাঁদছে।
সিন্ডিকেট সব লুটে নিচ্ছে। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কে নেবে? নাকি সিন্ডিকেটে যারা আছে তারা রাষ্ট্রযন্ত্রের চেয়েও শক্তিশালী?
জবাবে শিল্পপ্রতিমন্ত্রী বলেন, এগুলোর ব্যাপারে নেত্রীর নির্দেশ ‘জিরো টলারেন্স’। ধরুন আমি বাণিজ্যমন্ত্রী। এগুলো তো আমার ধরা উচিত। আমি কি ধরছি? মন্ত্রীত্ব চালানো এত সোজা কথা নয়।
তাকে প্রশ্ন করা হয়, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারলে এই কালিমাতো আপনাদের গায়েই লাগবে, তাই না?
উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওই যে কালকে ওবায়দুল কাদের সাহেব বলছে, মন্ত্রী হয়ে আপনি (শিল্প প্রতিমন্ত্রী) নিজেই তো সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেন না। আপনি সিন্ডিকেট নিয়ে কথা বলেন কেন? সব কথা বলা যায় না। এখন আমার মন্ত্রণালয়ের সিন্ডিকেট ভাঙতে আমাকে তো দায়িত্ব দেয়নি। প্রতিমন্ত্রী হিসাবে আমার কোনো পাওয়ার নেই। মন্ত্রী হলো মন্ত্রণালয়ের ‘অল ইন অল’ সচিব আর মন্ত্রী। আমিতো মাঝখানে বসে আছি এমনিতেই। তার পরও সত্যটা বলার চেষ্টা করি। কিন্তু বলতে গেলেই থামিয়ে দেওয়া হয়। দুঃখ হয়, সবাই টাকার পিছে ঘুরছে। কোনো অভাব নেই আমাদের দেশে।
আপনি বলেছেন, যারা একসময় খালি ব্রিফকেস নিয়ে ঘুরত তারা এখন ব্যাংকের মালিক। তারা কারা এবং সংখ্যায় কেমন হবে?
এমন প্রশ্নের উত্তরে কামাল মজুমদার বলেন, এদের সংখ্যা একেবারে কম নয়। আপনি খবর নিলেই পাবেন। ঢাকা শহরে আমার রাজনৈতিক বয়স ৫০ বছর। কে কোথা থেকে উঠে এসেছে সব কিছু জানি। আর কিছু বলব না। এমনিতেই আমলারা আমার পেছনে লেগেছে। তারা নেত্রীকে আমার সম্পর্কে নানা কথা বলছে। আমি যদি সব কথা বলতে যাই, দেখবেন আমার লাশটা রাস্তায় পড়ে আছে।
বার্তা বাজার/জে আই