বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মখা’ এর প্রভাবে সাগরে অস্বাভাবিক জোয়ার ও ৪নং বিপদ সংকেতের পর নোয়াখালীর হাতিয়ার সাথে সারাদেশের নৌ-যান চলাচল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। দুইদিন বন্ধ থাকার পর মখার প্রভাব কেটে যাওয়ায় আবার স্বাভাবিক হয়েছে সারাদেশের সাথে হাতিয়ার নৌ-যোগাযোগ। এতে স্বস্তি ফিরেছে হাতিয়া থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ভোলা, মনপুর, নোয়াখালী সদর সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাওয়া যাত্রীদের।

সোমবার সকাল থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নলচিরা-চেয়ারম্যান ঘাট, নলচিরা-চট্টগ্রাম ঘাট, তমরদ্দি-ঢাকা সদর ঘাট সহ সবগুলো নৌ-রুটে স্পীডবোট, ট্রলার, লঞ্চ চলাচলা শুরু হয়েছে। সকাল থেকে বিভিন্ন ঘাটে পন্যবাহী ট্রলার আসতে দেখা গেছে।

এতে স্বস্তিতে সাধারণ যাত্রীরা। এদিকে সিগনাল নেমে যাওয়ায় ঘাট ও উপক‚ল তীরবর্তী এলাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো পুনঃরায় খুলতে শুরু করেছে ব্যবসায়ীরা। ঝড়ের বিপদ সংকেত পাওয়ার পর বেড়ি বাঁধের ওপর থাকা লোকজন নিজেদের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে নিরাপদে আশ্রয় নেন। সোমবার সকাল থেকে তারাও নিজ নিজ বিটে-বাড়িতে ফিরে আসা শুরু করেছেন।

স্থানীয়রা বলছেন, গত বছরে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এ ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির পর সবশেষ মোখার আঘাতে উপক‚লে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে দ্রæত সময়ের মধ্যে যদি হাতিয়ার উপক‚লে টেকশই বেড়ি বাঁধ এবং বøক নির্মাণ না করা হয় তাহলে আগামিতে এমন পরিস্থিতি বড় ধরনের ক্ষতির মূখে পড়বে দ্বীপের প্রায় সাড়ে ৭লাখ মানুষ। তাই দ্বীপবাসীর দাবি দ্রæত সময়ের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বেড়ি বাঁধ এবং বøক নির্মাণ করা।

বুড়িরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, গত শুক্রবার সন্ধায় আমার বাবা মারা গিয়েছে, রাতে চট্টগ্রাম থেকে রওনা দিয়ে ভোরে চেয়ারম্যান ঘাটে আসি। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সকাল থেকে নৌ-চলাচল বন্ধ থাকায় আমি সহ শত শত লোক বাড়িতে আসতে পারেনি। ঘাটের পাশে এক আত্মীয়ের বাড়িতে কোনরকম রাত্রি যাপন করতাম। আজকে (সোমবার) সকালে নৌ-চলাচল শুরু হলে হাতিয়া এসেছি, কিন্তু বাবার মুখখানা শেষ বারের মত দেখার সুযোগ হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কায়সার খসরু জানান, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে যে ঝড়ো বাতাস, হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়েছে তাতে কোথাও কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার কয়েকদিন আগে সকল ফসলী জমি থেকে শস্য উঠে যাওয়ায় ফসলের কোন ক্ষতি হয়নি। নৌ-যান চলাচল শুরু হয় হাতিয়া দ্বীপের সাথে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে।

বার্তা বাজার/জে আই