পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, হুন্ডির সঙ্গে পারি না। হুন্ডি নিয়ন্ত্রণে আমাদের চাপ অব্যাহত থাকবে। এছাড়া আমরা রিজার্ভ নিয়ে বাড়াবাড়ি করি না। কারণ ৫ থেকে ৭ বছর আগে আমি নিজেও রিজার্ভ সম্পর্কে জানতামই না। ইদানিং যেহেতু রিজার্ভের পরিমাণটা বেড়ে গিয়েছিল সেজন্য সবার চোখে পড়েছে। আমরা কোনোভাবেই মানতে চাই না রিজার্ভ কমবে। এটা চলমান প্রথা। রিজার্ভ বাড়বে, কমবে এটাই স্বাভাবিক। আগে তো কেউ খবরও রাখত না। এখন যেই রিজার্ভ আছে সেটা মন্দ নয়। আমাদের বর্তমানে ৪ থেকে পাঁচ মাসের আমদানি-রপ্তানির টাকা রিজার্ভে আছে।
সোমবার (১৫ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘আইএমএফের সময়কালে অসুবিধাগ্রস্ত মানুষের কথা জাতীয় বাজেটে কীভাবে প্রতিফলিত হতে পারে’ শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মন্ত্রী। সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের দরিদ্ররা বঞ্চিত। এটা ঐতিহ্যগতভাবে বঞ্চিত। আমি গ্রামে দেখেছি একটানা কীভাবে মানুষ বঞ্চিত হয়। আমি সরকারের মালামাল নিয়ে যখন গ্রামে যাই, তখন শত চেষ্টা করেও আমার ইচ্ছামতো সেগুলো দিতে পারি না। এটা একটা সমস্যা।
আইএমএফ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আইএমএফ এর ওপর নির্ভরশীল না। আইএমএফ আমাদের প্রয়োজনে টাকা দেয়। সংস্থাটি আমাদের দেশে পরিদর্শনে আসে কোনো মিশনে নয়। আইএমএফ ও আমাদের দেশের অনেকে মিশন কথাটা বলে থাকেন। এই মিশন কথাটায় আপত্তি আছে। প্রধানমন্ত্রীও সাম্প্রতিককালে তাদের এরকম শব্দ ব্যবহার না করতে বলেছেন। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, আইএমএফ দাতাগোষ্ঠী নয়। আমাদের বাজেটের দুই ভাগও দাতাদের টাকা নেই। আমরা ঋণ করে টাকা আনি এবং সুদে আসলে পরিশোধ করি। স্বাধীন জাতির কাছে দাতা শব্দটা মানায় না। আইএমএফ কোনো শর্ত দেয়নি, যা দিয়েছে তা শর্ত নয়। এগুলোকে শর্ত বলা ঠিক নয়। বলা যেতে পারে রিকয়ারমেন্ট। দেশে মূল্যস্ফীতির চাপ আছে। গত মাসে সামান্য একটু কমেছে, মন্দের ভালো। মজুরিও একটু বেড়েছে।
ঋণ খেলাপির বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ন্ত্রণে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এটার সঙ্গে নানাবিধ স্বার্থবাদী বড় বড় লোকেরা জড়িত আছে। তারা এখন পর্যন্ত সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। সরকার তাদের বিরুদ্ধে কিছু করতে চায়, কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকেও তো আসন ঠিক রাখতে হবে। এজন্য তাকেও এ জায়গায় ও জায়গায় কমপ্রোমাইজ করতে হয়।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা সুশাসন দিচ্ছি, আমরা সংবিধানের শাসন দিচ্ছি, আমরা আইনের শাসন দিচ্ছি। আপনারা বলুন, আমরা কোথায় সংবিধানের বাইরে গিয়ে প্রচলিত আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করছি কি না। থাকলে এটা বলতে হবে। আমরা অন্য কারো কাছে জবাবদিহিতা করব না। আমরা জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করব।
বার্তা বাজার/জে আই