মহাসমাবেশে অংশ নিতে ইতোমধ্যে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়েছেন হাজারো নেতাকর্মী। ফলে রাতেই জনারণ্যে রূপ নেয় নয়াপল্টন। নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হওয়ায় সেখানে সড়কে যান চলাচল কিছুটা সংকুচিত হয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বিকেলের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের ভিআইপি সড়কে জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা।

এর আগে, বিকেলে বিএনপিকে নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি দেয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এ খবর নেতাকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে ধীরে ধীরে নয়াপল্টন এলাকা উৎসবে রূপ নেয়।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, আশুরার চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও দুটি রাজনৈতিক দলের প্রতি সম্মান জানিয়ে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি। এজন্য তাদের ২৩টি শর্ত দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, কোনো কুচক্রীমহল যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে সেজন্য পুলিশের পাশাপাশি সমাবেশ এলাকায় বিজিবি মোতায়েন থাকবে।

এরপর এদিন বিকেলে মহাসমাবেশের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ইতিবাচক ভূমিকার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, আপনারা আগামীকাল নয়াপল্টনস্থ বিএনপির মহাসমাবেশের নিরাপত্তা বিধানে যথাযথ সহযোগিতা করবেন। আশা করি সমাবেশে আসার পথে জনগণ ও বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে কোনো প্রকার বাধা প্রদান করা হবে না।

বিকেলের দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়কে অবস্থান করলে পুলিশ তাদেরকে বারবার সরিয়ে দেয়। কিন্তু সন্ধ্যার পর সেই চিত্র পাল্টাতে থাকে। নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ব্যাপক হারে বাড়তে থাকলে কিছুটা নীরব হয়ে পড়েন উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা। তবে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দলটির কার্যালয়ের সামনের সড়কে বুধবার (২৬ জুলাই) বিকেল থেকে রাখা প্রিজন ভ্যান, সাঁজোয়া যান এখনও রয়েছে।

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুক্রবার (২৮ জুলাই) দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের এক দফা দাবিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

উল্লেখ্য, এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়ক অথবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২৭ জুলাই সমাবেশ করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাছে চিঠি দিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু ডিএমপির পক্ষ থেকে এই দুটি জায়গায় একটিতেও অনুমতি দেওয়া হয়নি।

ডিএমপি কমিশনার জানান, বৃহস্পতিবার কর্ম দিবস থাকায় নয়াপল্টনে সমাবেশ করলে যানজট সৃষ্টি কারণে জনদুর্ভোগ হবে। এ ছাড়া ‘হাইকোর্টের অবজারভেশন’ থাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করা যাবে না। তাই, বিএনপিকে গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

ডিএমিপর এমন বক্তব্যের পর বুধবার (২৬ জুলাই) রাতে বিএনপির নেতারা বৈঠকে বসেন। পরে রাত ৯টার দিকে মহাসমাবেশ এক দিন পিছিয়ে শুক্রবার (২৮ জুলাই) বাদজুমা নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

বার্তা বাজার/জে আই