জামালপুরের মেলান্দহে পরিসংখ্যান ব্যুরো’র জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১ প্রকল্পের ক্রয়কৃত ট্যাব হতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে পাওয়া ট্যাব স্কুলে ফেরত না দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের টিসি দেওয়ার হুমকি দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক স্কুলের সহকারী শিক্ষক ও পরিচালকের বিরুদ্ধে।

উপজেলার রাবেয়া ইসলাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক রওশন আলী পান্না’ ও সহকারী শিক্ষক মাসুদ রানার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, গত সোমবার (৮ মে) পরিসংখ্যান ব্যুরো’র জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১ প্রকল্পের ক্রয়কৃত ট্যাব হতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে মেলান্দহে ৪১টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২৪৬ জন মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ট্যাব বিতরণ করা হয়। সেদিন রাবেয়া ইসলাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণীর ৬জন শিক্ষার্থীর মাঝেও ট্যাব বিতরণ করা হয়। বিতরণের পর থেকেই উপজেলার রাবেয়া ইসলাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক রওশন আলী পান্না’ ও সহকারী শিক্ষক মাসুদ রানা শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ট্যাব ফিরিয়ে নিতে চাপ প্রয়োগ করে আসছেন।

রবিবার (১৪ মে) দুপুরে ট্যাব স্কুলে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বাড়িতে পাঠিয়েদেন ওই ছয় শিক্ষার্থীকে। তারা বাড়িতে না গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে মৌখিক অভিযোগ দেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের নিকট থেকে ট্যাব ফিরিয়ে নিতে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। ট্যাব ফিরিয়ে না দিলে টিসি দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। আজ ক্লাস চলাকালীন সময়ে বই ও ব্যাগ রেখে দিয়ে আমাদের ট্যাবের জন্য বের করে দিয়েছে পরিচালক রওশন আলী পান্না স্যার ও সহকারী শিক্ষক মাসুদ রানা স্যার।
তারা উপজেলা মাধ্যমিক ও ইউএনও অফিসে মৌখিক অভিযোগ দিয়ে বাড়িতে চলে যান।

এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত রাবেয়া ইসলাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক রওশন আলী পান্না’র সাথে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ট্যাবগুলো আসলে ওদের জন্য না। স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশে ট্যাবগুলো এই স্কুলের জন্য উপহার হিসেবে দিয়েছে। ওদের নাম অন্য একটি স্কুলে রেজিষ্ট্রেশন করা। এ স্কুলে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত অনুমোদন আছে। আপনারা খোজ নিয়ে দেখেন। ওরা একদিনের জন্য ব্যবহার করতে পরিচালকের নিকট থেকে ট্যাব নিয়েছিল। সাতদিন পার হলেও ট্যাব দেয়নি বলে ওদের ফেরত আনতে বলা হয়েছে।

সহকারী শিক্ষক মাসুদ রানা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের বিদ্যালয় ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত অনুমোদন আছে। মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ায় পাশের একটি স্কুল থেকে। ট্যাব শিক্ষার্থীরা স্কুলে রেখে নাকি বাসায় রেখের ব্যবহার করবে এর সঠিক নিয়ম জেনে বলতে হবে।

মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো. আশরাফুল আলম বলেন, এই ট্যাব শিক্ষার্থীদের নামে রেজিষ্ট্রেশন করা।তারা ব্যতিত অন্য কারও ব্যবহারের সুযোগ নেই। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। তাদেরকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। আপনারা পরিসংখ্যান অফিসে খোজ নিন আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন।

উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের জুনিয়র পরিসংখ্যান কর্মকর্তা স্বপ্না আক্তার বলেন, এই ট্যাব যেই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে শুধু তারাই ব্যবহার করতে পারবে। অন্য কারও ব্যবহারের সুযোগ নেই। রাবেয়া ইসলাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ঘটনা শুনে শিক্ষকদের বুঝিয়ে বলা হয়েছে। বুঝে শুনে একটা মীমাংসা করতে হবে। সাংবাদিকদের এ ঘটনার সংবাদ প্রকাশ করতে নিষেধ করেন তিনি।

ওই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান হাজী দিদার পাশা বলেন, আমিতো ঢাকা, না জেনে আসলে কি বলি বিষয়টা সত্য না মিথ্যা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম মিঞা বলেন, এটা এরকম হবে কেনো এ বিষয়টা নিয়ে আমি এই শিক্ষকের সাথে কথা বলবো। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।

বার্তাবাজার/এম আই