বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) আমদানিতে স্থলপথে ভারতের দেয়া নিষেধাজ্ঞার ফলে এবার বিপাকে পড়েছেন খোদ দেশটির ব্যবসায়ীরাই। এর ফলে বাংলাদেশ থেকে কম খরচে পোশাক আমদানিসহ বেশ কয়েকটি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।
সোমবার (১৯ মে) টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কম খরচ, স্বল্প মজুরি, ভর্তুকিযুক্ত বিদ্যুৎ ও স্বল্প শুল্ক সুবিধা পাওয়ায় ভারতের অনেক ব্যবসায়ী বাংলাদেশে পোশাক কারখানা স্থাপন করেন।
তবে ভারতীয় সরকারের এ নিষেধাজ্ঞার ফলে এখন থেকে তারা এসব সুযোগ সুবিধা আর পাবেন না। বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক স্থলপথে পাঠাতে যেখানে সময় লাগতো মাত্র ২ থেকে ৩ দিন, বর্তমানে নিষেধাজ্ঞার কারণে কত সময় ব্যয় হবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। এখন থেকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রথমে জাহাজে কলকাতা বা মুম্বাইয়ের নাভাশেভা বন্দরে পাঠানো হবে। এরপর সেখানে কাস্টমসের সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে স্থলপথে ব্যবসায়ীদের কাছে যাবে।
এ বিষয়ে ভারতের অ্যাপারেল এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল মিথিলেশ্বর ঠাকুর বলেন, এ নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশ থেকে পণ্য পরিবহনের সময় ও খরচ বৃদ্ধি পাবে। এতে ভারতের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক খাতের প্রতিযোগিতা সীমিত হতে পারে। ঠাকুর আরো বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশি পোশাক আমদানিতে বহুমাত্রিক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে যখন ভারতের পোশাক আমদানির একটি বড় অংশ স্থলপথে আসে।
এর মধ্যে শুধু পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়েই ৭৬শতাংশ পোশাক ভারতে আসে।’ বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ‘ভারতীয় নির্মাতারা স্থানীয় কাপড় কিনলে ৫ শতাংশ জিএসটি দিতে হয়, কিন্তু বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান চীন থেকে করমুক্ত কাপড় আমদানি করতে পারে এবং ভারতীয় বাজারে রপ্তানির জন্য প্রণোদনাও পায়।’
বাংলাদেশের বিশাল উৎপাদন ক্ষমতা এবং সময়মতো সরবরাহের জন্য অনেক ভারতীয় খুচরা বিক্রেতাই তাদের উপর নির্ভরশীল। ভারতের একটি খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘বড় অর্ডার থাকলে আমি বাংলাদেশকেই বেছে নিই, কারণ তারা এককভাবে সম্পূর্ণ অর্ডার সময়মতো দিতে পারে।’ তবে বর্তমান এই নিষেধাজ্ঞার ফলে কম খরচে কীভাবে প্রতিষ্ঠান চালাবেন তা জানেন না বেশিরভাগ ভারতীয় খুচরা ব্যবসায়ী।
বার্তাবাজার/এসএইচ