আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখনও নির্ধারিত হয়নি, অথচ এরই মধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা ও সহিংসতার চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠছে— এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।
রোববার (১৮ মে) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, “নির্বাচনের তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি, অথচ ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় একে অপরের বিরুদ্ধে দখলদারির প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। পাবনার আটঘরিয়ায় আমাদের একটি কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। নেতাকর্মীদের উপর হামলাও হয়েছে। এই অবস্থায় আমরা কীভাবে আশা করব যে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে?”
ডা. তাহের বলেন, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার প্রক্রিয়াকে দলের স্বার্থের বাইরে রেখে জাতীয় স্বার্থে বিবেচনা করছে। তিনি জানান, ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় কিছু বিষয়ে তাদের পূর্বের অবস্থান থেকে দলটি সরে এসে নতুনভাবে ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা যখন বুঝেছি, আমাদের সিদ্ধান্তের চেয়ে অন্য কোনো প্রস্তাব দেশ ও জাতির জন্য বেশি উপযোগী, তখনই আমরা সেই দৃষ্টিকোণ থেকে মত পরিবর্তন করেছি। জামায়াত ইসলামী সবসময় দেশের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।”
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া সহিংসতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এসব ঘটনার পেছনে একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র থাকতে পারে, যার লক্ষ্য হলো দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা। এই ষড়যন্ত্র নিন্দনীয় এবং সরকারকে অনুরোধ করব, তারা যেন দৃঢ়ভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করে।”
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য একটি গ্রহণযোগ্য, অবাধ, সুষ্ঠু এবং সন্ত্রাসমুক্ত নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য প্রয়োজন একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনী পরিবেশ এবং নির্বাচন কমিশনের কার্যকর ভূমিকা।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “নির্বাচন কমিশনের কিছু সিদ্ধান্তে নিরপেক্ষতার অভাব ও দক্ষতার ঘাটতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমরা আশা করি, সরকার যথাযথ উদ্যোগ নেবে যাতে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ একটি ‘লেভেল প্লেইং ফিল্ডে’ পরিণত হয়—যেটি শুধু ভোটের দিন নয়, অনেক আগেই নিশ্চিত করতে হবে।”
ডা. তাহের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সরকারকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্যায়ে সব দল যেন সমান সুযোগ পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজন হলে কঠোর হতে হবে, আবার কোথাও সমন্বয়ও করতে হবে—কিন্তু যে করেই হোক, একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।”