ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বৃহস্পতিবার বলেছেন, পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) তত্ত্বাবধানে নেওয়া উচিত। এ মন্তব্য এমন এক সময় করা হলো যখন দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সামরিক সংঘর্ষ থেকে মাত্রই শান্তিচুক্তিতে পৌঁছেছে। খবর রয়টার্সের।
গত সপ্তাহে ভারত পাকিস্তানে ‘জঙ্গি ঘাঁটি’ লক্ষ্য করে হামলা চালায়, যা ছিল ভারতশাসিত কাশ্মীরে পাকিস্তান-সমর্থিত একটি হামলার জবাব। উভয় দেশ পরস্পরের আকাশসীমায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন পাঠানোর পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত একটি সমঝোতায় পৌঁছায় তারা।
কাশ্মীরের শ্রীনগরে সেনাদের উদ্দেশে ভাষণে রাজনাথ সিং বলেন, এ রকম দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিদ্রোহী একটি দেশের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র নিরাপদ আছে কি? তিনি বলেন, আমি মনে করি পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) তত্ত্বাবধানে নেওয়া উচিত।
এ মন্তব্যের জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা এক সামাজিক মাধ্যমে পোস্টে বলেছে, ভারতের এ বক্তব্য তাদের ‘অনিরাপত্তা’ প্রকাশ করে। উল্লেখ্য, আইএইএ (ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি) হচ্ছে জাতিসংঘের একটি সংস্থা, যা বিশ্বের পরমাণু কর্মসূচিগুলো তদারকি করে যেন সেগুলো শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়।
ভারত ও পাকিস্তান ১৯৯৮ সালে পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়ে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হয়। দীর্ঘদিনের বৈরিতার কারণে এই অঞ্চল বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ পারমাণবিক সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতে পারমাণবিক ও তেজস্ক্রিয় উপাদানের চুরি এবং অবৈধ লেনদেনের ঘটনা বারবার ঘটেছে। যা একটি সক্রিয় কালোবাজারের অস্তিত্বের ইঙ্গিত দেয়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আইএইএর কাছে আহ্বান জানিয়েছে, ভারতের পারমাণবিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্ত পরিচালনা করা হোক। একই সঙ্গে, ভারতের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন তারা নিজেদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
বার্তাবাজার/এসএইচ