জুলাই আন্দোলনে আহত প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন মনিরের দুটি কিডনিই অচল হয়ে গেছে। আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনকালে হামলায় আহত হলে তার পায়ে লাগা আঘাত থেকে এ অবস্থা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
মনির নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মালিপাড়া মহল্লার মাওলানা সিরাজুল ইসলামের ছেলে। তিনি বনপাড়া পৌর জামায়াতে ইসলামের সেক্রেটারি ও পৌরসভার সদ্য সাবেক কাউন্সিলর।
স্থানীয়রা জানান, বনপাড়া বাজারে ৫ আগস্ট দুপুরে মনিরের নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদবিরোধী বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় আওয়ামী লীগের তৎকালীন সংসদ সদস্য সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর দুই ভাগিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালান। এতে অন্যদের সঙ্গে হামলার শিকার হন মনির। পরে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ফিরে আসেন এলাকায়। তখন থেকেই তার ডান পায়ে আঘাতের যন্ত্রণা চলতে থাকে। চিকিৎসা চললেও তেমন ভালো হয়নি সেটি।
গত ২৭ এপ্রিল মনির হঠাৎ বেশি অসুস্থ বোধ করলে তাকে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ২৯ এপ্রিল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালের কল্যাণপুর শাখায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ সাইফ বিন মিজানের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চিকিৎসক সূত্রে জানা গেছে, মনিরের ডান পায়ে আঘাতজনিত কারণে দীর্ঘদিন থেকে ব্যথা এবং পরবর্তীকালে সেলুলাইটিস (জীবাণুর সংক্রমণে) হয়ে যায়। এতে কিডনি আক্রান্ত ও অচল হয়ে পড়েছে। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য কিডনি, রক্ত ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বোর্ডের সিদ্ধান্তের আলোকে কিডনির উন্নত চিকিৎসার জন্য রোববার বায়োপসি পরীক্ষা করা হয়। এর প্রতিবেদন পেয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আহত মনিরের বড় ভাই উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম বলেন, জুলাই বিপ্লব ও পরবর্তী সময়ে এলাকার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে মনির অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ফলে তার অসুস্থতার বিষয়ে নিজে এবং আমরা নজর দেওয়ার সুযোগ পাইনি। সবার কাছে দোয়া চাই মনির যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরে আসেন।