সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল উপস্থাপিকা তমা রশিদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ডা. কুশল। একটি ফেইসবুক পোষ্টের বরাত দিয়ে তিনি লিখেন,

“ উনি আরেকজন উপস্থাপিকা। অতিথিকে বেগুন, শসা এগুলো নিয়ে প্রশ্ন করেন। বেগুন শসা হাতে ধরে বলে যে এগুলো আপনার কাজে লাগবে। গেস্ট কে জিজ্ঞেস করে কক্সবাজারে গেলে তোমাকে আইফোন কে দিয়েছে ? ভাবলে অবাক লাগে উনি ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা করা। দেশে অনেক বিকৃত রুচির মানুষ আছে। এদের প্রোগ্রামের টার্গেট সেই দর্শক রাই। ”

সামাজিক মাধ্যমে ডা. কুশলের বিস্ফোরক এই মন্তব্যের বিপরিতে ভাইরাল উপস্থাপিকা তমা রশিদ একটি ফিরতি পোষ্টে বলেন,

“ আপনাদের পরিবার, শিশু ও সমাজকে ভালো ভালো অনুষ্ঠান দেখান। আপনারা নেতিবাচক কথাও বলবেন আবার আমাদের ভাইরাল হওয়া তথাকথিত খারাপ অনুষ্ঠান দেখবেন। তাহলে দোষ তো আপনাদের বেশি। আপনারাও তো আমাদের নিয়ে বড় বড় স্ট্যাটাস, ভিডিও বানিয়ে ভিউ বাণিজ্য করছেন, পেজের রিচ বাড়াচ্ছেন। আপনারা জোয়ারে শরীর ভাসানো মানুষ। ”

তবে, সামাজিক মাধ্যমে উভয়ের পাল্টাপাল্টি পোষ্টের বিপরিতে কমেন্টবক্স ঘেঁটে দেখা যায়, বেশিরভাগ নেটিজেন তমা রশিদের বিরুদ্ধাচারণ করার পাশাপাশি নেতিবাচক মন্তব্য করে রেখেছেন উভয়ের কমেন্টবক্সে। এছাড়াও তমা রশিদের সাম্প্রতিক প্রায় সবগুলো কন্টেন্ট এবং তার কমেন্টবক্স ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, বেশিরভাগ মানুষ বিরক্তি প্রকাশের পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তায় নিয়োজিত যথাযথ কর্তৃপক্ষকে এই ধরণের কন্টেন্ট প্রস্তুতকারী প্রচারকারী এবং পরিবেশনকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নিতে বলেছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তমা রশিদ এবং ডা. কুশলের পাল্টাপাল্টি পোষ্ট আলোচনায় আসতেই, তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর প্রতারণার অভযোগের পাশাপাশি খালিদ স্পিক পেইজর কন্টেন্ট ক্রিয়েটর খালিদ হাসান আইনি হেনেস্তার অভিযোগও এনেছেন। এছাড়াও তাকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিতর্ক সম্মূখে আসতেই বর্তমানে প্রশাসনে কর্মরত একজন কর্মকর্তা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কলেজে পড়ার সময় তমা রশিদ তার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। ব্যাক্তিগত ঘনিষ্ঠ সময় কাটানোর বাহিরে সম্পর্কটি টিকিয়ে রাখতে তার পক্ষ থেকে কোন উদ্দ্যোগ ছিলো না। বরং উচ্চাভিলাসী জীবন যাপনের জন্য সে যা খুশি তাই করতো। ফলে আমি তার সঙ্গ ত্যাগ করতে বাধ্য হই।

তমা রশিদের উপস্থাপনায় প্রচারিত অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের মধ্যে জনকয়েক অতিথির মন্তব্য জানতে চাইলে তারা জানান, খুব নোংড়া প্রকৃতির স্ট্যান্ডবাজি এগুলো। একজন অতিথিকে কক্সবাজার, আইফোন, বেগুন কিংবা শশা সংক্রান্ত প্রশ্ন করার মাধ্যমে প্রকাশ্যে বিব্রত করা মুলত একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা। সামাজিক মাধ্যমের ভিউ বানিজ্যের নামে হওয়া এমন কুরুচিকর অনুষ্ঠান বন্ধ হওয়া উচিত। এছাড়াও সামাজিক শৃঙ্খলার স্বার্থে এসব বিব্রতকর কন্টেন্ট নির্মাতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী হয়ে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেন কেউ কেউ।

পুরো বিষয়টি ঘিরে ব্যক্তিগত মতামত জানতে তমা রশিদের মুঠোফোনে একধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। অপরদিকে ডা. কুশলের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যা বলার তা আমার ফেইসবুক পোষ্টেই বলে দিয়েছি। একটা নোংড়া ব্যাপার নিয়ে এরচেয়ে বেশী কিছু বলার আগ্রহ আমার নেই।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ড. বদিউল আলম মজুমদারের নিকট সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অশ্লীল, বিব্রতকর এবং সুড়সুড়ি মুলক কন্টেন্ট মুলত কিভাবে উঠতি বয়সিদের মনভ্রষ্ট করছে। এবং সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সাইবার অশ্লীলতার ফলে জন-নাগরীকের মনস্তাত্বিক পরিণতি কি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি জানান, পৃথিবীর কোন দেশেই উন্মুক্ত মাধ্যমে অশ্লীলতাকে সমর্থন দেয়া হয় না। ফলে আমাদেরও এটি সমর্থন দেয়ার সুযোগ নেই। জননিরাপত্তা ও মনস্তাত্ত্বিক সুস্থতার জন্য অশ্লীল কন্টেন্ট সামাজিক মাধ্যম থেকে সরিয়ে নেয়া, পর্ণসাইট বন্ধ করে দেয়া সরকারের দ্বায়িত্ব ও কর্তব্যধিন বিষয়। আশা করবো সরকার এদিকেও সুনজর দিবে।

ই.এক্স/ও.আর/বার্তা বাজার