রাজধানীর মিরপুর মডেল থানার সিটিএসবি (Counter Terrorism and Transnational Crime) ইন্সপেক্টর এএসএম শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মিরপুর পূর্ব মণিপুর কাঠালতলা এলাকার একটি বিলাসবহুল ভবনের তৃতীয় তলায় অবস্থিত একটি মূল্যবান ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। একই ভবনে তার স্ত্রীও বসবাস করেন, যিনি নিজেও ঐ ভবনের মালিকানা দাবি করেন।
দেশ টিভির অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, এই ভবনসহ একাধিক সম্পত্তি ইন্সপেক্টর শামসুদ্দিন নিজের ও স্ত্রীর নামে কিনেছেন। একটি বাড়ির দলিলে দেখা গেছে, মালিক হিসেবে নাম রয়েছে সাজিয়া আরফিন রুনার, যিনি পেশায় একজন গৃহিণী। প্রশ্ন উঠছে—একজন গৃহিণী কিভাবে রাজধানীতে কোটি টাকার বাড়ির মালিক হলেন? তদন্তে জানা গেছে, রুনা হচ্ছেন এএসএম শামসুদ্দিনের স্ত্রী। নিজেকে নজরের বাইরে রাখতে বাড়ির মালিকানা স্ত্রীর নামে দলিল করেছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, “বাসাটি উনারই। তবে মালিকানার বিষয়ে উনি কখনো সরাসরি কিছু বলেন না।” ভবনের ব্যবস্থাপক দাবি করেন, “আমি এখানে চাকরি করি, মালিক কে জানি না—শুধু ম্যানেজ করি।” এখানেও পাওয়া গেছে কর ফাঁকির চিত্র। তিন কোটি টাকা মূল্যের জমি ও ভবনটি দলিলে দেখানো হয়েছে মাত্র ১ কোটি ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকায়। এইভাবে সরকারকে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ইন্সপেক্টর শামসুদ্দিন ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। তবে অফ দ্য রেকর্ড আলোচনায় তিনি দাবি করেন, তার নিজের নামেও সম্পত্তি রয়েছে এবং এসব সম্পদ তিনি বিদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত থাকাকালীন অর্জন করেছেন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “পুলিশ সদস্যদের জবাবদিহিতা না থাকাই এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটার প্রধান কারণ। শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়েছেন বলেই কেউ যদি অস্বাভাবিক সম্পদের মালিক হন, সেটি কোনো যুক্তি নয়। এটি বিচারহীনতা প্রলম্বনেরই একটি উদাহরণ।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া থাকলেও বাস্তব প্রয়োগের অভাবেই এসব অনিয়ম বারবার ঘটছে। বিষয়টি এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
বার্তাবাজার/এসএইচ