বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যার ঘটনায় গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার পৃথক তিন মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক চার মন্ত্রী, ব্যাংকার ও এক সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আসামিদের গাজীপুর আদালতে হাজির করে পুলিশ। প্রিজনভ্যান থেকে নামিয়ে তাদের হাঁটিয়ে আদালত কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। শুনানি শেষে আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিলে পুলিশ ফের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে নিয়ে যায়। বেলা ১১টার দিকে গাজীপুর মহানগর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওমর হায়দারের ৩ নম্বর আদালত তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
আসামিরা হলেন- আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি, জুনায়েদ আহমদে পলক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাধন চন্দ্র মজুমদার, এক্সিম ব্যাকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল হাসান।
আলোচিত এসব অভিযুক্তদের আদালতে আনার পর বিক্ষোভ মিছিল করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ আসামিদের ওপর ডিম নিক্ষেপ করেন। এসময় বিক্ষোভকারী ও সাধারণ জনতা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার দাবি করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ২০ জুলাই দুপুরে গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার কুনিয়া বড়বাড়ি এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ‘জয়বাংলা’ সড়কের মাথায় মিনহাজ হোসেন (১৬) নামের এক ছাত্রকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের চাচা আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে উল্লেখিতদের নামে ওই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর হত্যা মামলা করেন।
একই দিনে রাত ৯টার দিকে গাছা থানার বোর্ড বাজার সংলগ্ন ভ‚সির মিল মেম্বারবাড়ি রহিমা মার্কেটের সামনে হুমায়ূন কবির (২৭) নামে অপর এক শিক্ষার্থীকে পুলিশ গুলি করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ওই বছর ৯ আগস্ট নিহতের বড়ভাই হযরত আলী বাদী হয়ে গাছা থানায় উল্লেখিতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
একই দিন বেলা ২টার দিকে ছাত্রদের বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে বোর্ডবাজারে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কালাই মার্কেটস্থ বেলমন্ড টেইলার্সের সামনে মো. রায়হান (১৮) নামে এক ছাত্রকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মামুন সরদার বাদী হয়ে ওই বছরে ৫ অক্টোবর উল্লেখিতদের আসামি করে মামলা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মোস্তফা কামাল বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়ে এবং মারধরে আসামিরা সরাসরি নির্দেশদাতা। আদালত ঘটনার সঙ্গে আসামিদের সংশ্লিষ্টতা আছে প্রতীয়মান হওয়ায় গ্রেপ্তারের আবেদন মঞ্জুর করেন।
বার্তাবাজার/এসএইচ