ব্যবসায়ীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে যুবদলের বহিষ্কৃত নেতা আশরাফ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী গোলজার হোসেন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ব্যবসায়ীর মালামাল লুটের ঘটনায় থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়কের পদ থেকে বহিষ্কার হন আশরাফ ভূঁইয়া। এখন তার বিরুদ্ধে নতুন করে আরেক ব্যবসায়ীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার দুপুরে সোনারগাঁও উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের তাজমহল এলাকায় ব্যবসায়ী গোলজার হোসেনের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যাচেষ্টা করেন আশরাফ ও তার সহযোগীরা। ব্যবসায়ী গোলজার হোসেন জানান, জমির সাইনবোর্ড তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় লোহার পাত কিনতে উপজেলার জামপুরের তাজমহল এলাকার মাসাবো বাজারে নবীর হোসেনের দোকানে যান। তার সাথে দুই ভাতিজা ও গাড়ির চালক ছিল। একপর্যায়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে ৪-৫টি মোটরসাইকেলে যুবদলের বহিস্কৃত নেতা আশরাফ ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ১৫-২০ জন সন্ত্রাসী দোকানের সামনে তাদের ঘেরাও করে। এ সময় আশরাফ ভূঁইয়ার সন্ত্রাসী বাহিনীর সোয়েব মিয়া তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং হত্যার হুমকি দেন। সোয়েব একাধিক ডাকাতি মামলার আসামী।
বাজারে স্থানীয়দের উপস্থিতি দেখে কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান আশরাফ ও তার সঙ্গীরা। পরে কাজ শেষ করে বাড়ি যাওয়ার পথে পেরাবো এলাকায় ব্যবসায়ী গোলজার হোসেনের গাড়ির গতিরোধ করে তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যা চেষ্টা করেন তারা। কিন্তু গাড়িচালকের বিচক্ষণতায় সেখান থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন ওই ব্যবসায়ী।
গোলজার হোসেনের গাড়িচালক কামাল হোসেন বলেন, ‘স্যারকে নিয়ে বাজারে গেলে কয়েকজন সন্ত্রাসী গাড়ি ঘেরাও করে স্যারের কথা জিজ্ঞাসা করে। স্যার দোকানে গেছে বলার সাথে সাথে সবাই দৌড়ে দোকানে যায়। তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে পেরাবো এলাকায় আবার আমাদের গাড়ির গতিরোধ করে স্যারের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। আমি কৌশলে গাড়ি দ্রুত চালিয়ে পালিয়ে আসতে সক্ষম হই।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও একাধিক দোকানিরা জানান, গোলজার হোসেন রড কিনতে বাজারে আসে তখন আউয়াল হোসেন নামের এক কাঠ ব্যবসায়ীর দোকানে যান। সেখানে আশরাফ ভূঁইয়ার লোকজন এসে তাকে গালিগালাজ করে। এ সময় তাদের এখানে কেন ঝামেলা করছে কি না, জানতে চাইলে তারা সেখান থেকে চলে যায়। পরে লোকমুখে শোনা যায়, যাওয়ার পথে তাদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক যুবদল নেতা আশরাফ ভূঁইয়া বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার জানা নেই। আমি ঢাকায় থাকি।’ একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটনা ঘটেছে মাসাবো এলাকায়, তাজমহলে আসল কেন? আপনারা সাংবাদিক, আপনারা মনে করেন আপনাদের অনেক ক্ষমতা! নিউজ করে কী করবেন, পারলে করেন। আমি কী রাস্তায় থাকি যে, রাস্তায় আক্রমণ করব।’
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে ব্যবসায়ীর দায়ের করা একটি অভিযোগ পেয়েছি। এর আগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বার্তাবাজার/এসএইচ
