ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনের পরিবেশ ভালো বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা। তবে ভোটার উপস্থিতি কম বলে তিনি জানান৷ সংসদের মেয়াদের শেষ দিকে ভোট হওয়ার কারণে জনগণের আগ্রহ কম বলে তিনি ধারণা করেন। তিনি জানান, ভোটার কম হওয়ার আসল কারণ পরে জানা যাবে। শেষ বেলায় ভোটার আরও বাড়বে বলেও প্রত্যাশা করেন এই নির্বাচন কমিশনার।

সোমবার (১৭ জুলাই) ভোট শুরু পর ঢাকা-১৭ আসনের একটি কেন্দ্র পরিদর্শন ও নির্বাচন ভবনে সিসিটিভিতে ভোট পর্যবেক্ষণের এক পর্যায়ে তিনি সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এই কমিশনার বলেন, ঢাকার বনানী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রে গিয়েছিলাম। দু’একটা কক্ষে ভোট চালু হয়েছে দেখেছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখেছি। এজেন্ট একজন প্রার্থীর দেখেছি। নৌকা প্রতীকের এজেন্টকে পেয়েছি। প্রিজাইডিং অফিসার বলেছেন তালিকার কিছু এজেন্ট আসেন নাই, হয়তো পৌঁছাবে। ভোটের পরিবেশ ভালো। তেমন কিছু নজরে আসে নাই। সিসি ক্যামেরায়ও অনিয়মের চিত্র দেখিনি। পরিবেশ ভালো আছে।

ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভোটার উপস্থিতি কম আমরাও দেখেছি। এটার কারণ হতে পারে খুব অল্প সময়ের জন্য (সংসদের মেয়াদ)। অভিজাত এলাকা। এজন্য ভোটার হয়তো এ কারণেও আগ্রহী না। তবে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারবো পরে। তবে ভোট পড়ার হার বাড়বে বলে আমরা ধারণা।

স্বতন্ত্র প্রার্থী তারেকুল ইসলামের ভোট বর্জনের বিষয়ে এই কমিশনার বলেন, শেষ পর্যন্ত দেখতে পারতেন। যদি সকালেই ভোট বর্জন করেন তাহলে তো উনি দেখতে পারলেন না শেষ পর্যন্ত কী হলো।

নিজেদের কাজে ঘাটতি নেই এমনটা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, দূর থেকে কাশবন ঘন লাগে। কাছে গেলে ফাঁকা ফাঁকা লাগে। আমাদের মুভমেন্ট কর্মকাণ্ড কাছ থেকে আপনারা (সাংবাদিকরা) দেখেছেন, আপনাদের কী মনে হয়? আমাদের কি আন্তরিকতার ঘাটতি ছিল? আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে।

ভান্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাচনে সিসিটিভির তার কেটে ফেলা প্রসঙ্গে এই কমিশনার বলেন, আমরা চ্যালেঞ্জের মধ্যে বেনাপোল নির্বাচন নিয়ে। সেখানে ১২ বছর ধরে নির্বাচন হচ্ছে না। আরেকটা হচ্ছে ভাণ্ডারিয়ায়। অনেক কেস-কাছারির মধ্য দিয়ে অবশেষে আল্লাহর রহমতে হলো। কি পরিমাণ ভোটার যে ওখানে হাজির হয়েছে এবং কি সুন্দর যে ভোট হচ্ছে! আমরা ক্ষণে ক্ষণে সবার সঙ্গে কথা বলছি। তারা বলছে ভালো ভোট হচ্ছে। ওখানকার রিকোয়েস্টের ভিত্তিতেই কিন্তু আমরা ইভিএম ও সিসি ক্যামেরা দিয়েছিলাম। বেনাপোলের সিসি ক্যামেরা ওকে। ওয়ার্কিং ফাইন। কিন্তু ভাণ্ডারিয়ায় কিছু কিছু মিসক্রিয়েন্ট। রবিবার রাতে সিসি ক্যামেরার ক্যাবল কেটে দিয়েছে। কাটা পড়েছে বললাম না। সকাল থেকে ডিসি, এসপি, গোয়েন্দা সংস্থা লাগিয়ে চেক করেছি এবং ওপরের ‍ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি। এতে কিন্তু ভোটের অসুবিধা হচ্ছে না। ইভিএমে যেহেতু সুযোগ নাই। দুই পক্ষে উপস্থিতিই ব্যালেন্স করছে।

তিনি বলেন, আমাদের গাজীপুরে চিন্তা করেছিলাম কাটাকাটি করবে। কিন্তু দেখলাম সেই কাটাটা ভাণ্ডারিয়ায় হলো। এটা আমরা খুঁজে বের করবো কে কখন কারা কীভাবে কোন পক্ষের হয়ে এ জিনিসগুলো করেছে। আমি নির্দিষ্টভাবে এসপিকে দায়িত্ব দিয়েছি। ডিবির কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিয়েছি। রাস্তায় অনেক ফুটেজ থাকে সিসি ক্যামেরা থাকে, কোনও কোনও বাসায় থাকে। এটা খুঁজে বের করার জন্য বলেছি। চার-পাঁচটা কেন্দ্রের তার কাটা হয়েছে। এজন্য পাঁচটা কেন্দ্রে আমাদের পৃথক পাঁচ জন পর্যবেক্ষক দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রে গণমাধ্যমকর্মী ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে এই কমিশনার বলেন, এই কমপ্লেইনটা পেয়েছি। ক্যান্টনমেন্ট কেন্দ্রে সাংবাদিককে মোবাইল নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এটার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বলা আছে ঢুকে অবগত করবে। গোপন কক্ষ বাদে সাংবাদিকরা সব জায়গায় যেতে পারবে। কাজেই এটা অন্যায় হয়েছে। এর বিচার হওয়া উচিত। আমরা ওটা ছাড়বো না। আমরা কমিশনে ওঠাবো। সেই চেয়ারম্যানের আচরণ, ঔদ্ধত্যমূলক আচরণ করেছে।

বার্তা বাজার/জে আই