টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সড়কের পাশে নাম পরিচয়হীন এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর গর্ভে জন্মানো সেই ফুটফুটে নবজাতককে দত্তক হিসেবে পেয়েছেন লাল মাহামুদ ও রিয়া মাহামুদ নিঃসন্তান দম্পতি। রোববার (১৬জুলাই) বিকেলে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নবজাতককে তার নতুন অভিভাবকদের হাতে তুলে দেন জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন হায়দার। নবজাতককে দত্তক নেওয়া ওই দম্পতি একই জেলার ভ‚ঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নের ভারই গ্রামের বাসিন্দা।

এসময় টাঙ্গাইল জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শাহ আলম, মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিনসহ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাকিলা বিনতে মতিন জানান, শিশুটি উদ্ধারের পর থেকেই কুমুদিনী হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ও যতœ-সহকারে রাখা হয়েছিলো। শিশুটির গর্ভধারিনী মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় টাঙ্গাইল জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভায় রেজুলেশনের মাধ্যমে সভার সিদ্ধান্তনুযায়ী রোববার লাল মাহামুদ ও রিয়া মাহামুদ দম্পতির কাছে শিশুটিকে

হস্তান্তর করা হয়। শিশুটির ভবিষ্যতের জন্য ব্যাংকে স্থায়ী আমানতও রাখা হয়েছে।

এদিকে সংবাদ প্রকাশের পর ওই মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর পরিবার-স্বজনদের দৃষ্টিগোচর হলে তারা রোববার এসে তাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে গেলেও নবজাতক শিশুটিকে নিতে অস্বীকৃতি জানায়।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার (৫জুলাই) বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেন জাতীয় মহাসড়কের (ঢাকা-টাঙ্গাইল পুরাতন মহাসড়ক) বাহমহাটি যমুনা জেনারেল হাসপাতাল সংলগ্ন স্থানে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীকে মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পেয়ে সন্তান প্রসব করতে সহযোগিতা করেন, মজিরন বেগম নামের স্থানীয় এক নারী। পরে সেখান থেকে নবজাতক শিশুটিকে ইউএনওর কাছে নিয়ে গেলে সে তাৎক্ষণিক সরকারি গাড়িযোগে ওই ভারসাম্যহীন নারীকেসহ কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে ওই শিশুটিকে দত্তক নিতে ২৮ দম্পতি আবেদনের মাধ্যমে আগ্রহ প্রকাশ করলে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক লাল মাহামুদ ও রিয়া মাহামুদ দম্পতির হাতে রোববার শিশুটির মা-বাবা পরিচয়ে হস্তান্তর করা হয়।

বার্তা বাজার/জে আই