বিদেশে উচ্চশিক্ষায় দেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ অ্যাওয়ার্ড- প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ (পিএমএফ) ২০২৩-২৪ পেয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক শিক্ষার্থী আফিফা আনজুম। যাচ্ছেন যুক্তরাজ্যের বিশ্বখ্যাত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি অধ্যায়নের জন্য।

গত রোববার (৯ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।

এবারের ১০ জন পিএইচডি গবেষকের মধ্যে আফিফা আনজুম একজন। তিনি পিএইচডি ডিগ্রীর জন্য বেসরকারী ক্যাটাগরীতে প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ ২০২৩-২৪ এর জন্য নির্বাচিত হয়েছেন।

জানা গেছে, এই বৃত্তি পেতে হলে প্রত্যেক আবেদনকারীকে আগে নিজ যোগ্যতায় বিশ্বের ১শ’ র‌্যাংকিংয়ের মধ্যে থাকা কোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত করতে হয়। ভর্তি নিশ্চিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গর্ভন্যান্স ইনোভেশন ইউনিটের (জিআইইউ)- আওতায় এই বৃত্তির জন্যে আবেদন করতে হয়। এ বছরের পহেলা অক্টোবর আফিফা আনজুম তাঁর পিএইচডি গবেষণা শুরু করবেন।

আফিফা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেল্থ এন্ড ইনফরমেটিকস বিভাগ থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর উভয় ক্ষেত্রেই ১ম স্থান অর্জন করে উত্তীর্ণ হন। স্নাতকোত্তর শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগে গবেষণা সহকারী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি আইসিডিডিআরবি-তে সিনিয়র রিসার্চ অফিসার হিসেবে কাজ করেন। এছাড়াও, ইউনেস্কো তে তরুণ গবেষক হিসেবে এবং গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ কোলাবোরেটর নেটওয়ার্কের সহযোগী হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ ২০২৩-২৪ প্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করে আফিফা আনজুম বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তা আমাকে এই কৃতিত্ব অর্জন করার সুযোগ দিয়েছেন বলে আমি নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান বলে মনে করছি। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের গভর্ন্যান্স ইনোভেশন ইউনিটের সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

কৃতিত্বপূর্ণ এই ফেলোশিপ অর্জনে আফিফা তাঁর চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বলেন, আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অনেক চ্যালেঞ্জ থাকে যা আমাদেরকে মোকাবেলা করেই সামনে এগোতে হয়। আমি কেমব্রিজে গবেষণার জন্য অফার লেটার পেলে সেখানে বেশ কিছু শর্ত (যেমন, ভিসা, ফান্ডিং, ডিবিএস, ইত্যাদি) ছিলো। অন্যান্য সব শর্ত পূরণ করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি এবং মাসিক খরচ দেয়া ছিল আমার সাধ্যাতীত। সেকারণে আমি ধরে নিয়েছিলাম আমার স্বপ্ন হয়তো আর পূরণ হবে না। তবে নিজের আত্মবিশ্বাস, শ্রম আর সৃষ্টিকর্তার কৃপায় প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপের জন্য নির্বাচিত হওয়াতে আমার ফান্ডিং চ্যালেঞ্জটি পূরণ হলো। একইভাবে আগামী দিনের চ্যালেঞ্জগুলো সফলতার সাথে পূরণ করতে পারবো বলে প্রত্যাশা করছি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, পিএইচডি শেষে দেশে ফিরে আমি বয়ঃসন্ধিকালীন কিশোর- কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য কাজ করতে চাই। এছাড়া, নিজেকে একাডেমিয়া ও গবেষণায় আত্মনিয়োগ করতে চাই।

প্রসঙ্গত, সিভিল সার্ভিস, শিক্ষাবিদ এবং দেশের যোগ্য নাগরিকদের জ্ঞান ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ চালু করা হয়। বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য এখন পর্যন্ত ২৭৭ জন মাস্টার্স এবং ১০৮ জন পিএইচডি ফেলোকে এই বৃত্তি দেওয়া হয়েছে।

বার্তা বাজার/জে আই