সরকার পতনের এক দফা আদায়ে আগামী ১৮ জুলাই মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের সব জেলা ও মহানগরীতে পদযাত্রা এবং ১৯শে জুলাই শুধু ঢাকায় শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। ঢাকায় গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত এই পদযাত্রা হবে।

বুধবার (১২ জুলাই) আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত সমাবেশে এই ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ৩৪টি রাজনৈতিক দল ও জোট মিলে সরকারের পদত্যাগের এই একদফা আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
এই কর্মসূচিতেও সরকার বিদায় না নিলে যা করা দরকার বিএনপি তা করবে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, অনেক কথা বলেছি। এখন আর কথা বলায় সময় আমাদের হাতে নেই। এখন হবে সরকার পতনের আন্দোলন। মানুষ এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর নয় আওয়ামী লীগ।

এর আগে দুপুর ২টায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় এই সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে চায় না বলে মন্তব্য করে সমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘রক্ত দিয়ে হলেও আমরা এবারের নির্বাচন প্রতিহত করব।’

বিএনপি নেতা আবদুস সালাম বলেন, ‘গত ১৪-১৫ বছরে শেখ হাসিনা কোনো কথা শুনেননি। তাই উনার এখন কোনো কথা বলারও দরকার নাই।’

এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলেই নির্বাচন হবে। প্রধানমন্ত্রী আপনাকে যেতেই হবে।’

বরকতউল্লাহ বলেন, আজকের সমাবেশে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি প্রমাণ করেছে যে আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে।

আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে লুটপাটের রাজত্ব বানিয়েছে বলে অভিযোগ করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এ সরকারকে আর ক্ষমতায় রাখা যায় না।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনি নিজে ঠিক করবেন, নাকি আমরা ঠিক করে দেব; আপনাকে যেতেই হবে। এরশাদ থাকতে পারেনি, আপনিও থাকতে পারবেন না।’

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ের প্রত্যয় জানিয়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন বলেন, সব শ্রেণিপেশার মানুষ আজ রাজপথে নেমে এসেছে।

এর আগে সকাল থেকেই দলের নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন। বেলা ১২টার মধ্যেই বিএনপির নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণে ভরে যায় সমাবেশস্থল। নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে তৈরি করা মঞ্চে গান পরিবেশন করা হয়। ফাঁকে ফাঁকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতারা বক্তব্য দিতে থাকেন। সমাবেশে ব্যানার, ফেস্টুন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে যোগ দেন বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বার্তাবাজার/এম আই