একটা আঘাত আসলে পাল্টা দুটো আঘাতের হুমকি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘সরকারের ভোটচুরির প্রকল্পে যারা থাকবে, তাদের সাবধান করে দিচ্ছি। এই ভোটচুরির প্রকল্পে অংশগ্রহণ করবেন না। কেউ রেহাই পাবেন না।’

বুধবার (১২ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি আয়োজিত ‘যুগপৎ ধারায় বৃহত্তর গণআন্দোলনের ১ দফা যৌথ ঘোষণার সমাবেশ’-এ এ কথা বলেন তারা।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সারাদেশের আইনজীবীদের বলবো— এই গায়েবি মামলা নিয়ে আদালতে যাওয়া বন্ধ করে দেন। যেতে আপনাকে (শেখ হাসিনা) হবেই। কোন দেশে যাবেন, কোন দেশের ভিসা পাবেন— এই বিষয়গুলো রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘‘আমরা সবাই রক্ত দিতে চাই। কেন দিবো। আমাদের রক্ত নিলে আমরা পাল্টা রক্ত নেবো। আমাদের উপর একটা আঘাত এলে, পাল্টা দুইটা আঘাত করবো। গণতন্ত্রের যুদ্ধে গণতন্ত্র উদ্ধার করতে যা করবেন, তাই শুদ্ধ।’ বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

গয়েশ্বর উল্লেখ করেন, ‘মহাসচিবের ডাকের সঙ্গে সঙ্গে গণতন্ত্রের যুদ্ধ শুরু হবে। যুদ্ধে নেতৃত্ব দেবেন জননেতা তারেক রহমান।’

তিনি বলেন, ‘যারা নির্বাচনে যেতে চাইবে আর ভোটচোরদের কোনও রেহাই দেওয়া হবে না।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘শেখ হাসিনা ভালোভাবে পাবলিক সেন্টিমেন্ট ভালোভাবে বুঝেছে। এজন্যই তিনি ভোটচুরিতে নেমেছেন। আজকে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, বিভিন্ন জেলায় প্রশাসক পদায়ন করা হয়েছে, তারা মন্ত্রীদের পিএস ছিল। নামগুলো সব পেয়ে গেছি। আগামীতে যখন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে তখন এরা কেউ এই পদে থাকতে পারবে না।’

‘এই ভোটচুরির প্রকল্পে যারা থাকবে, তাদের সাবধান করে দিচ্ছি। এই ভোটচুরির প্রকল্পে অংশগ্রহণ করবেন না। কেউ রেহাই পাবেন না। যেতে হবে। আর সংবিধানের দোহাই দিয়ে, সংবিধানের অধীনে নির্বাচন, এটা ভুলে যান। সংবিধান গিলে খেয়ে ফেলেছেন। সংবিধান থাকলে আজকে কেন বিদেশিরা এই দেশে আসছে। তারা কি ভারতে যাচ্ছে, ভুটানে যাচ্ছে? শ্রীলঙ্কায় যাচ্ছে? সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে না।’ বলেন আমির খসরু।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘সারাদেশে ঘরে ঘরে অশান্তি সৃষ্টি করে আজকে শান্তি মিটিং করেন। তারা বলে, যারা অশান্তি সৃষ্টি করবে, তাদের প্রতিহত করবে। আমি কিছুক্ষণ আগে খবর নিয়েছি, আরেকটু হলেই থরথর…।’

মির্জা আব্বাস দাবি করেন, ‘আওয়ামী লীগের সমাবেশে লোক নাই। আগামী দিনেও থাকবে না। বিএনপির সাধারণ কর্মীর নিঃশ্বাসে তারা ভেসে যাবে। লগি-বৈঠার দিন শেষ। মানুষ হত্যা করে ক্ষমতায় আর আসা যাবে না।’

‘দেশের মানুষ বাঁচতে শিখেছে। মানুষ শিখেছে আওয়ামী লীগকে শায়েস্তা করতে হয়। আজকে মাঝে মাঝে টিপটিপ বৃষ্টি হচ্ছে, মাঝে মাঝে রোদ, প্রচণ্ড গরম সত্ত্বেও লাখ লাখ মানুষ আজ সমাবেশে। এসব প্রমাণ করে এই সরকারের সময় নাই। মহাসচিব ঘোষণা দেওয়ার আগেই কেটে পড়ুন।’ উল্লেখ করেন মির্জা আব্বাস।

স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘এই দেশে সরকার জঙ্গলের শাসন কায়েম করেছে। গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েম করেছে। এই জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয় নাই।’

স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিনা রহমান বলেন, ‘তারা নতুন করে ক্ষমতায় থাকার জন্য নির্বাচন করার চেষ্টা করছে। এই নির্বাচন হতে দেবে না দেশের জনগণ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কোনও নির্বাচন হবে না।’

ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ব্যারিস্টার শাজাহান উমর বলেন, ‘বক্তব্য দিয়ে লাভ নাই। কীসের দফা। ২৭ দফা দেওয়া হয়েছে, ১০ দফা দেওয়া হয়েছে। এই সরকার নড়ে নাই। এবার তারেক রহমান একদফা দিয়েছেন। জেগে উঠো। আকাশ পাতাল দরিয়া জেগে উঠো। এই সরকার ভালো কথা বুঝে না।’

বার্তাবাজার/এম আই