মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে সম্মিলিত ক্লাব বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

বুধবার (১২ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁয়ে ইউজিসি বরাবর এই স্মারকলিপি প্রদান করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

স্মারকলিপি প্রদান শেষে শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী। অনেকটা বাধ্য হয়েই আজ আমরা ইউজিসি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করতে এসেছি করেছি। আপনারা সকলেই জানেন, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস আশুলিয়ায় অবস্থিত। ২০১৭ সালের ২৮ জানুয়ারি মানারাতের আশুলিয়ায় স্থায়ী ক্যাম্পাসের কার্যক্রম শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মন্জুরি কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল মানারাতের আশুলিয়া ক্যাম্পাস পরিদর্শন করে ভূয়সী প্রশংসা করেন। মানারাতের সকল বিজ্ঞাপন এবং প্রচারনায় সব সময় আশুলিয়া ক্যাম্পাসকে স্থায়ী হিসেবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হলো ঈদুল আযহার ছুটি শেষে আমাদের স্ব স্ব ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম আমাদের সকল ক্লাস অনলাইনে করানো হবে। এর কারণ হিসেবে জানানো হয়েছে আশুলিয়া ক্যাম্পাসকে গুলশানে স্থানান্তর করা হবে কিন্তু এর অফিসিয়াল কোন নোটিশ দেয়া হয়নি। এ বিষয়টি আমাদেরকে অত্যন্ত ভাবিয়ে তুলেছে।

অনলাইনে ক্লাস করার যৌক্তিকতা নেই জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা খুব উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় আছি। হঠাৎ করে কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল কর্তৃপক্ষ। এখন এমন কোন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যাতে করে অনলাইনে ক্লাস করতে হবে। এখন অনলাইনে ক্লাস করার কোন ধরনের যৌক্তিকতা নেই। বিনা নোটিশে অনলাইনে ক্লাসের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণার সামিল।

গুলশান ক্যাম্পাসের জায়গার ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে আশুলিয়া ক্যাম্পাসকে গুলশানে স্থানান্তর করবে কিন্তু অত্যন্ত আশংকার বিষয় হলো গুলশান ক্যাম্পাসের জায়গার ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাছাড়া যে শ্রেণীকক্ষ গুলশান ক্যাম্পাসে রয়েছে তাতে গুলশানের ছাত্রদেরই সংকুলান হয় না সেখানে আশুলিয়ার ছাত্রদের নিয়ে হ্যারেজম্যান্ট করা ছাড়া আর কিছুই হবে না। শুনেছি বাড়িভাড়া করে সেখানে ক্লাসের ব্যবস্থা করবে যা সম্পূর্ণ বেআইনি। এই অবস্থায় গুলশানে ক্যাম্পাস স্থানান্তর মানেই হল হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ কঠিন এক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়া। আমাদের সকলের অভিভাবকরাও অত্যন্ত উদ্বেগ এবং দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন।

এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের ৫টি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হুবহু তুলে ধরা হলো:

১. আশুলিয়াকে স্থায়ী ক্যাম্পাস হিসেবে জেনেই ভর্তি হয়েছি তাই আশুলিয়াকে স্থায়ী ক্যাম্পাস রাখতে হবে।

২. অনতিবিলম্বে আশুলিয়া স্থায়ী ক্যাম্পাস খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে সরাসরি ক্লাসে পাঠদান নিশ্চিত করতে হবে।

৩. ক্যাম্পাস স্থানান্তরের মতো আত্মঘাতী পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হবে।

৪. ভর্তিকৃত সকল শিক্ষার্থীদের আশুলিয়াতেই পড়াশোনা শেষ করতে হবে।

৫. আশুলিয়া ক্যাম্পাসের প্রতি সম্মানিত বোর্ড সদস্যসহ সকল অথরিটির সুনজর দিতে হবে।

এসময় শিক্ষার্থীদের উপরোক্ত দাবিগুলো মেনে নিয়ে দ্রুত ক্লাসে ফেরার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান।

বার্তাবাজার/এম আই