পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগ, কলাপাড়া পৌর ছাত্রলীগ এবং সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করার পর পরই পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কমিটি বাবদ দেওয়া টাকার ছবিসহ টাকা ফেরত চেয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এ নিয়ে পুরো জেলা জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।

কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিক তালুকদার পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ঘরানার নেতা হিসেবে পরিচিত। সোমবার রাতে কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হলেও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আশিক তালুকদারকে কমিটিতে রাখা হয়নি। আর এতেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে।

আশিক তালুকদার তার ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘জেলা ছাত্রলীগ সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যে টাকাগুলো নিয়েছেন ফেরত দেন, নাইলে গণভবনে যাবো বাকি ডকুমেন্ট নিয়ে।’ এদিকে কমিটি ঘোষণার পর আশিক তালুকদার তার মোবাইলে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতির কাছে টাকা ফেরত চেয়েছেন, এর একটি অডিও রেকর্ড পাওয়া গেছে।

এতে শোনা যায় আশিক তালুকদার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিকে বলছেন ভাই আপনার সাইন পাওয়ার আছে, আপনি কমিটি দিছেন। এখন আমার টাকাগুলো ফেরত দেন। তবে এর পর সাইফুলকে বলতে শোনা যায় ‘ফোন রাখ, তুই ফোন রাখ।’

কলাপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিক তালুকদার বলেন,‘আমি কেন্ডিডেট হতে চাইনি, যেহেতু আমি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। এর পরও জেলা সভাপতি সাইফুল ইসলাম আমাকে কেন্ডিডেট হতে বলে। বিভিন্ন সময় সে বিভিন্ন অজুহাতে ২০ হাজার, ৩০ হাজার এমনকি পাঁচ হাজার টাকা করেও নিয়েছে। ধাপে ধাপে আমার কাছ থেকে প্রচুর টাকা নিয়েছে। তার এক খালাতো ভাই এর মাধ্যমেও টাকা নিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সর্বশেষ কোরবানীর চার থেকে পাঁচ দিন আগে আমাকে ফোন করে বলে কমিটি দেওয়া হবে, কী করলি। আমার কাছে সে ২০ লাখ টাকা চাইলে আমি বলি ভাই এত টাকা কীভাবে দিব। পরে আমি তাকে ১৫ লাখ টাকা দেই। পটুয়াখালী নেছারিয়া মাদ্রাসার দিকে যেতে হাতের ডানে খান মোশারেফ হোসেন এর বাসার সিরিতে বসে সে আমার কাছ থেকে টাকা নেয়।’

আশিক তালুকদার বলেন ‘১৫ লাখ টাকার মধ্যে পাঁচ হাজার টাকার বান্ডিল ছিল ১২টা, পাঁচশ এবং এক হাজার টাকার মিলিয়ে একটি বান্ডিলে ছিল এক লাখ টাকা এবং বাকী গুলো ছিল এক হাজার টাকার বান্ডিল।’

এদিকে ফেইসবুকে টাকার ছবিসহ পোস্ট করায় জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহানুর রহমান সুজন মোবাইল ফোনে আশিক তালুকদারকে ফেইসবুক পোস্ট ডিলিট করতে হুমকি দেয় বলেও জানান আশিক। এর একটি মোবাইল ফোন রেকর্ডে হুমকির বিষয়টির সত্যতা মিলেছে।

এ বিষয়ে জানতে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলে তিনি ফোন রিসিভ না করে কেটে দেন।

এ বিষয়ে জানতে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভির হাসান আরিফের মোবাইল ফোনে কল করলে তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।

এদিকে জেলা ছাত্রলীগ কলাপাড়া উপজেলার মোট তিনটি ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করার পর এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাৎক্ষণিকভাবে তিনটি কমিটিই স্থগিত করে এরইমধ্যে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।

বার্তাবাজার/এম আই