ছয় সদস্য বিশিষ্ট যুবদলের ওয়ার্ড কমিটি। সেই কমিটির দুজনকে চাঁদাবাজির অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে। বাকি চারজনের বিরুদ্ধে হয়েছে চাঁদাবাজির মামলা। ঘটনাটি রাজধানী মিরপুরের ৬ নাম্বার ওয়ার্ডের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে মিরপুরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ছয় সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদল। কমিটিতে কাউসারকে আহ্বায়ক ও সোহাগ শেখকে সদস্য সচিব করে চারজন যুগ্ম আহ্বায়ক রাখা হয়। তারা হলেন- জামাল হোসেন রানা, শাওন হাওলাদার, সাগর দেওয়ান ও ইব্রাহীম ইসলাম। ৫ আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রাজধানীর পল্লবীতে এক নারীর কাছে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগে কাউসারকে বহিষ্কার করা হয়। মর্জিনা বেগম নামের ওই নারীর কাছে আড়াই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন ওয়ার্ড যুবদলের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক। ওই নারীর অভিযোগ, চাঁদার টাকা না দেওয়ায় তাকে ও তার সন্তানদের মারধর করে কাউসার।
এদিকে গত সোমবার রাজধানীর মিরপুরে চাঁদাবাজির অভিযোগে ৬ নাম্বার ওয়ার্ড যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেন রানাকে গ্রেফতার করে যৌথ বাহিনী। কাঁচা বাজারে চাঁদাবাজি করার সময় রানাকে আটক করে সেনাবাহিনীকে খবর দেয় জনতা। এ ঘটনায় নেকিব হাছানামের একজন বাদী হয়ে রানাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় একটি মামলা করে। রানা বাদে মামলার বাকি আসামিরা হলেন, শেখ সোহাগ, শেখ ইব্রাহিম ইসলাম, সাগর দেওয়ান ও শাওন হাওলাদার, যারা কি না যুবদলের ওয়ার্ড কমিটিতে রয়েছে।
ব্যসবসায়ীরা জানান, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ওয়ার্ড যুবদল নেতারা মিরপুর ৬ নাম্বার বাজারের মাছের আড়ৎ ও আড়তদার সমিতি দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। গত রোববার রাত ৯টার দিকে রানার নেতৃত্বে কয়েকজন মা-বাবার দোয়া নামের মাছের আড়তে গিয়ে চাঁদা ও ব্যবসার ভাগ চায়। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আড়তের মালিক নেকিব হাছানকে হুমকি দেয়। একপর্যায়ে হামলা চালায় তারা। ভাঙচুর করে দোকান।
গণ্ডগোল দেখে ব্যবসায়ী ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে হামলাকারীদের ধাওয়া দেয়। তারা পালিয়ে যাওয়ার সময় রানাকে ধরে ফেলে স্থানীয় জনতা। পরে সেনাবাহিনীকে খবর দেওয়া হলে তারা এসে রানাকে নিয়ে যায় এবং পল্লবী থানায় সোপার্দ করে। চাঁদাবাজির ঘটনায় মামলার পর রানাকে সেই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। চাঁদাবাজির ঘটনায় ইতোমধ্যে রানাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
৬ নাম্বার ওয়ার্ড যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কয়েকজন সক্রিয় কর্মী নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, চাঁদাবাজির মামলায় পদধারী সবাই পালিয়েছে। এ ওয়ার্ডে যুবদলের আর অস্তিত্ব রইল না। সাংগঠনিক কার্যক্রম কীভাবে চলবে। ৬ নাম্বার ওয়ার্ডের সবার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগের কথা শিকার করে পল্লবী থানা যুবদলের সভাপতি নুর সালাম বলেন, ‘আমরা দেখে শুনে ভালো লোককে কমিটিতে এনেছি। নের্তৃত্ব পাওয়ার পর কেউ যদি অপকর্ম করে তার দায়ভার সংগঠন নিবে না। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সেক্রেটারি সাজ্জাদুল মিরাজ বলেন, ‘যদি সবার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে কমিটি বিলুপ্ত করা হবে। কারো অপকমের্র দায় সংগঠন নিবে না।’
বার্তাবাজার/এস এইচ