জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) চলছে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। ভর্তি পরীক্ষায় আগত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটারিয়ার খাবারে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত মূল্য। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ আগত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

মঙ্গলবার (১১ই ফেব্রুয়ারি) ভর্তি পরীক্ষার তৃতীয় দিনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটারিয়ায় পোলাও-ডিম ৫০ টাকা, পোলাও-মুরগি ৮০ টাকা, কাটলেট ২০ টাকা, ছোটো দই ৩০ টাকা দরে আগত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের থেকে নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ভর্তি পরীক্ষার প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে গ্রাহকদের থেকে ভাত-ডিম-ডাল ৬০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাধারণ সময়ে ডিম-খিচুড়ি ৩০ টাকা, পোলাও-মুরগি ৬০ টাকা, পোলাও-ডিম ৪০ টাকা, কাটলেট ১৫ টাকা, ছোটো দই ২৫ টাকা এবং ডিম-ভাত-ডাল নেওয়া হতো ৪০ টাকা করে নেওয়া হতো। অর্থাৎ, ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে প্রতিটি খাবারে ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ফলে আগত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। যশোর থেকে আগত এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. তানভীর পারভেজ বলেন, “আমরা বছরে একবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল খরচ সরকার বহন করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে নির্ধারিত খাদ্যমূল্যের চেয়ে যে অতিরিক্ত মূল্য নেওয়া হয় তা কোথায় যায়? আমরা জানি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে অতিরিক্ত মূল্য নেওয়া নিষেধ। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান আসিফ বলেন, “ক্যাফেটেরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় চলে। প্রতিবছরে একবার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ ক্যাম্পাসে আসেন। কিন্তু আমরা যদি তাদেরকে একটা দিন ভালো সেবা না দিয়ে এমন ধরনের ব্যবসায়িক চিন্তা করি তাহলে এটা আমাদের জন্যই লজ্জার। এছাড়া প্রশাসন থেকেও বলা হয়েছে অতিরিক্ত দাম না রাখার জন্য। তাই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ক্যাফেটারিয়ার খাবারে এমন উচ্চমূল্য গ্ৰহণ মোটেই কাম্য নয়। এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যাফেটারিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের উপ-পরিচালক মো. সারোয়ার হোসেন বলেন, “আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি এবং দাম বৃদ্ধির প্রসঙ্গে চিঠি দিয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য কিছুটা দাম বাড়িয়েছি কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যই নিচ্ছি।”

দাম বৃদ্ধি ও অনুমতি দেওয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ.কে.এম. রাশিদুল আলম বলেন, “দাম বৃদ্ধির প্রসঙ্গে আমি অবগত আছি এবং ক্যাফেটারিয়া কর্তৃপক্ষের চিঠি প্রেক্ষিতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ব্যতীত আগত ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের থেকে কিছুটা দাম বৃদ্ধির অনুমতি দিয়েছি।” তবে গত ৮ই ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের সঙ্গে ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের থেকে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দাম নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছিলেন।

 

বার্তাবাজার/এস এইচ