গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আরও ৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ভোর থেকে দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে মহানগর থানা-পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। দুই দিনে ওই মামলায় ১০৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

গ্রেপ্তার ৭৩ জনের মধ্যে ৪২ জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। হামলার ঘটনায় করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই উজ্জল হোসেন সোমবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাবেক মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে গত শুক্রবার রাতে দুষ্কৃতকারীরা হামলা ও ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে গাজীপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা হামলাকারীদের প্রতিহত করতে যান। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালান ও মারধর করেন। এতে ১৭ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত একজনকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় রবিবার দুপুরে একটি মামলা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. আব্দুল্লাহ মোহিত। মামলায় ২৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে আমজাদ মোল্লা নামে একজনকে। এলাকায় তিনি আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত। মামলার পর ওই দিনই পুলিশ ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। এরপর পুলিশ গ্রেপ্তার অভিযান শুরু করে। রবিবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে আরও ৭৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গাজীপুর সদর থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করা হবে। পুলিশের একাধিক দল আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালাচ্ছে।

এদিকে গাজীপুরে ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানে সাবেক এক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ১০০ জনকে আটক করা হয়েছে। রবিবার রাতের অভিযানে জেলা পুলিশ ২১ জন এবং মহানগর পুলিশ ৭৯ জনকে আটক করে। এর আগে ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানে মহানগর ও জেলা পুলিশ ৬৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গত শুক্রবার রাতে সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার গাজীপুরে দিনভর বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। বিক্ষোভের মুখে দায়িত্বে অবহেলার কথা স্বীকার করে ক্ষমা চান মহানগর পুলিশ কমিশনার। প্রত্যাহার করা হয় সদর থানার ওসিকে। বিক্ষোভ শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে এক শিক্ষার্থী আহত হন।

 

বার্তাবাজার/এস এইচ