বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পটপরিবর্তনের পর সাধারণ মানুষ এখন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র চায়। তারা দ্রুত নির্বাচন, সামাজিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, মৌলিক অধিকার চায়। কেননা ১৫ বছর দেশের মানুষ নির্বাচন থেকে বঞ্চিত। এখন তারা ভোট দিতে চায়।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে শহীদ আসাদের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলাম অন্তবর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ লাগছে না। অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ হতে হবে। কারণ নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন হবে। বিএনপি আশা করে, ড. ইউনূসের সরকার নিরপেক্ষভাবেই দায়িত্ব পালন করবে। দেশের সংকট মোকাবিলায় তারা কাজ করবেন।

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ইদানীং নানাভাবে বিভিন্ন কথা উঠছে। কথাগুলো এমনভাবে তোলা হচ্ছে, যা থেকে নতুন নতুন তর্কের সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমরা সোজা কথায় যেটা বুঝি তা হলো, সাধারণ মানুষ পরিবর্তনের পর এবার একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র চায়। সেই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে তারা তাদের অধিকার ফিরে পেতে চান। তারা নির্বাচন চান।

আমি কিছু কথা বললে সমালোচনা তৈরি হয়- এমন মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, দ্রুত নির্বাচন না হলে, সময়ক্ষেপণ হলে অপশক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠবে। জনগণ তার চাহিদা থেকে বঞ্চিত হবে। নির্বাচনে কে আসবে সেটা আমাদের কথার মূল উদ্দেশ্য নয়। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে আমরা সেটাই চাই, যার জন্য দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে অপেক্ষা করেছি। নির্বাচন শুধু একটা দলকে ক্ষমতায় বসানো নয় মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন হলো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপূর্ণ একটা পথ তৈরি করা। আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য থাকলেও সবাই এক জায়গায় ঐক্যবদ্ধ। আর তা হলো- সবাই দ্রুত নির্বাচন চায়।

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। তাহলে কি চার-পাঁচ বছর অপেক্ষা করবো? তাহলে তো জনগণ ভোট থেকে বঞ্চিত হবে।তিনি বলেন, আমরা শহীদ আসাদের রক্ত বৃথা যেতে দিতে পারি না, শহীদ আবু সাঈদের রক্ত বৃথা যেতে দিতে পারি না। সব মিলিয়ে যারা প্রাণ দিয়েছেন আমাদের ভবিষ্যতের জন্য, স্বপ্নের জন্য। সেই স্বপ্নগুলো যেন একটা ঐক্য গড়ে তুলে পূরণ করতে পারি সেই চেষ্টাই আমাদের করতে হবে।

সচিবালয় থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বৈরাচার সরকারের দোসররা বসে আছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সৃষ্টি করছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। শহীদ আসাদ পরিষদের সভাপতি ড. মাহবুব উল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।

 

বার্তাবাজার/এসএইচ