যশোরের চৌগাছায় ‘হানি ট্রাপ বা যৌন ফাঁদ’ ফেলে অর্থ আদায় চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বুধবার (২২ জানুয়ারি) তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এর আগে, মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাতে চৌগাছা পৌর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, চৌগাছার যাত্রাপুর গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী রূপালী খাতুন, চৌগাছার উত্তরকয়ারপাড়া গ্রামের শাহজাহান আলী ছেলে নান্নু মিয়া, মহেশপুর উপজেলার মান্দারবাড়িয়া গ্রামের আয়ুব হোসেনের ছেলে জাহিদ হোসেন, চৌগাছা উপজেলার মনমতপুর গ্রামের তাজুল ইসলামের দেলোয়ার হোসেন, একই গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে হৃদয় মহিফুল ও উত্তর কয়ারপাড়া গ্রামের নান্নু মিয়ার স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা।
বুধবার রাতে জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চৌগাছায় বাসা ভাড়া নিয়ে ‘হানি ট্রাপ বা যৌন ফাঁদ’ ফেলে অর্থ আদায় চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে চৌগাছার রুস্তমপুর গ্রামের আব্দুর রহমান নামে এক যুবক। তাকে বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে মহিলাকে দিয়ে ডেকে নিয়ে যায় চক্রটি। তাকে ‘হানি ট্রাপের’ মাধ্যমে ফাঁদে ফেলে মুক্তিপণ চাচ্ছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযানে নামে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) টিম।
মঙ্গলবার চৌগাছা চান্দা আফরা গ্রামে অভিযান চালিয়ে ভিকটিম আবদুর রহমানকে উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের দেওয়া তথ্যে চৌগাছা পৌর এলাকায় অভিযান চালিয়ে হানি ট্রাপ ফাঁদ চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, আটক রূপালী খাতুনের সঙ্গে ভিকটিম আবদুর রহমানের পূর্বপরিচয়ের একপর্যায়ে প্রলোভন দেখিয়ে মঙ্গলবার বেলা ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকা ৭ থেকে ৮ জন ব্যক্তি আবদুর রহমানকে ঘরের ভিতরে নিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট শুরু করে। সেখান থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে চান্দাআফরা গ্রামের জহুরুলের বাড়িতে আটকে রাখে। আসামিরা ভিকটিমের সঙ্গে থাকা নগদ দুই হাজার চারশ’ টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেন। ভিকটিমের মোবাইল থেকে তার বড় ভাইয়ের কাছে মুক্তিপণ হিসাবে নগদ এক লাখ টাকা দাবি করে। এরপর ভিকটিমকে তারা আসামি জহুরুলের বাড়িতে আটকে রেখে বাদির কাছে বার বার মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না দিলে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেয় চক্রের সদস্যরা।
মঙ্গলবার ভিকটিমকে উদ্ধার করে রাত পৌনে ১০টার দিকে চৌগাছা পৌরসভার ধনী প্লাজার সামনে থেকে রুপালী খাতুনকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর অন্য আসামিদের নাম ঠিকানা বলে দেয়। পরে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা পুলিশের কাছে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই মোস্তাক হোসেন বাদি হয়ে চৌগাছা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। বুধবার গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
বার্তাবাজার/এসএইচ