নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা কৃষি প্রধান অঞ্চল হলেও এখানকার আলু চাষিরা প্রতি বছর চরম সংকটের মুখোমুখি হচ্ছেন। সংরক্ষণের জন্য কোনো সরকারি বা বেসরকারি হিমাগার না থাকায় উৎপাদিত আলুর বড় একটি অংশ নষ্ট হয়ে যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার তথ্য মতে, এ বছর ১,৮৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪২ হাজার মেট্রিক টন। অথচ উপজেলায় কোনো হিমাগার নেই। জেলার মোট ১১টি হিমাগারের ধারণক্ষমতা মাত্র ৮২ হাজার ২৫০ টন, যা মোট উৎপাদনের পাঁচভাগের এক ভাগ সংরক্ষণে সক্ষম।
স্থানীয় চাষিরা বলছেন, পাশের জলঢাকা ও ডোমার উপজেলার হিমাগারগুলো ব্যবহারের জন্য অতিরিক্ত পরিবহন ও শ্রমিক খরচ গুনতে হয়। তবুও তা চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয়। ফলে বাধ্য হয়ে কম দামে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে, যা তাদের লোকসানের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কাকড়া গ্রামের চাষি জামিনুর রহমান জানান, গত বছর ৮ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। ফলন ভালো হলেও সংরক্ষণে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় বড় ক্ষতির মুখে পড়ি। এ বছর ১০ বিঘায় আলু চাষ করেছি, কিন্তু হিমাগার না থাকায় ক্ষেতের আলু সংরক্ষণ করতে পারছি না। পাশের উপজেলার হিমাগারে রাখতে পরিবহন ও শ্রমিক খরচের কারণে লাভের বদলে লোকসান হচ্ছে।
একই ধরনের সমস্যার কথা জানালেন সুন্দরগাতা গ্রামের হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, জমিতে যে আলু আছে, তুলতে ভয় পাচ্ছি। কারণ খরচ তুলতেই আলুর দাম শেষ হয়ে যায়। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছি, এখন জানি না কীভাবে সেই ঋণ শোধ করব। চাষিদের অভিযোগ, চলতি মৌসুমে আলুর বীজ বেশি দামে কিনতে হয়েছে। ফলন ভালো হলেও বাজারে দাম নেই। সংরক্ষণ না করতে পারায় মধ্যস্বত্বভোগীরা কম দামে আলু কিনে লাভবান হচ্ছেন।
এ নিয়ে ডিমলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর হাসান আল বান্না বলেন, ডিমলায় আলুর উৎপাদন প্রতিবছরই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হয়। কিন্তু হিমাগার না থাকায় অনেক আলু নষ্ট হয়ে যায়। একটি সরকারি বা বেসরকারি হিমাগার নির্মাণ করা গেলে স্থানীয় কৃষকদের পাশাপাশি আশপাশের জেলাগুলোর চাহিদাও মেটানো সম্ভব হবে।
বার্তাবাজার/এস এইচ