বান্দরবানের লামায় অপহরণ যেন নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হচ্ছে। তথ্য বলছে, পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা একাধিক ভয়ংকর অপহরণ চক্র গড়ে তুলেছে। চাহিদামতো মুক্তিপণ না পেলে মারধর ও হত্যার হুমকিও দিচ্ছে তারা। যতদিন যাচ্ছে অপহরণকারীরা আরও বেপরোয় হয়ে উঠেছে।
বিগত তিন সপ্তাহের ব্যবধানে লামা সরই ও গজালিয়া ইউনিয়নে একাধিক অপহরনের ঘটনা ঘটায় সন্ত্রাসীরা। এ ছাড়া একটি অগ্নিকান্ড ও আরো ১২জন নির্মাণ শ্রমিকের মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়ার খবরও পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার ভোর রাতে সরই ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের দুর্গম বমুখাল নামক এলাকা থেকে পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা ৭-জন তামাক চাষিকে খামার বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। একই সাথে সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা ৯জনকে তুলে নিয়ে গেলেও কিছুদূর গিয়ে দুজনকে মারধর করে ছেড়ে দেন। বাকী ৭জনকে চোখ বেঁধে গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর একটি টিম প্রায় ১০ ঘন্টা জোর অভিযান চালিয়ে অপহরণকৃতদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। অপহরণের শিকার পরিবারের লোকজন জানায় সশস্ত্র অবস্থায় পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা সিভিল পোশাক পরিধান করে এসে তাদের নিয়ে যায়।
স্থানীয়রাজানান, সম্প্রতি সময়ে পাহাড়ী সশস্ত্র গ্রুপের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েগেছে অপহরণ ও চাঁদাবাজির মাত্রা। চাঁদার দাবিতে সন্ত্রাসীদের বিভিন্ন লোক/গ্রুফ টার্গেট করে একের পর এক অপহরণে মেতে উঠেছে। এদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না পাহাড়ী বাঙ্গালী কেউই। অপহরণ, চাঁদাবাজি ও হুমকির শিকার অনেকে জানিয়েছেন, পাহাড়ী সশস্ত্র চাঁদাবাজরা কখনও জেএসএস সন্তুলার মার সশস্ত্র শাখার, জেএসএস এম এল ও ইউপিডিএফ বলে নিজেদেরকে পরিচয় দিচ্ছেন।
এর গত ১৯ ডিসেম্বর’২০২৪ চাঁদার দাবিতে পাহাড়ী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা লামা রাবার ইন্ডাষ্ট্রিজ এর সুপারভাইজার জসিম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে বিপুল অঙ্কের চাঁদা আদায় করে তাকে ছেড়ে দেয়। তার কিছুদিন পরে ফাদু খোলা এলাকা থেকে দুই নির্মান শ্রমিককে পাহাড়ী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে। গত ০৪ জানুয়ারী সরই ইউনিয়নের মেরাইত্যা হতে ক্লিপটন গ্রুফের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. রফিকুল ইসলাম কে চাঁদার দাবিতে পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে। পরে তাকেও একই কায়দায় চাঁদা আদায় করে ছেড়ে দেয়।
বার্তাবাজার/এস এইচ