ভোলার চরফ্যাশনে শশীভূষণ থানার চর কলমী ইউনিয়নের মাহাবুবুল নামের এক মৎস্য ব্যবসায়ীর বসত ঘর থেকে ৬ বস্তা ভিজিডির সরকারী চাল আটক করেন স্থানীয়রা।পরে স্থানীয়রা থানা পুলিশসহ ইউপি সচিব ও প্রশাসককে জানালেও ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে চাল গুলো জব্দ করেননি।

সোমবার রাতে চরকলী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মৎস্য ব্যবসায়ী মাহাবুবুলের বসত ঘর থেকে চাল গুলো আটক করা হয়। কর্মকর্তারা দাবী করেন ওই চাল গুলো মৎস্য ব্যবসায়ী মাহাবুবুল কার্ডধারীদের কাছ থেকে কিনে বাড়িতে রেখেছেন।

স্থানীয়রা জানান,গত ৮ জানুয়ারী চরকলমী ইউনিয়নের ১৫৪ জন হতদরিদ্র নারীদের মাঝে ভিজিডি চাল বিরতনের তারিখ ধার্য ছিলো। ধার্য্য তারিখে কিছু চাল বিতরন করে বাকী চাল বিতরন করেননি সচিব। পরেরদিন কার্ডধারী হতদরিদ্ররা চাল সংগ্রহ করতে ইউনিয়ন পরিষদে গেলেও তারা চাল পাননি। সোমবার ইউনিয়ন পরিষদের পিয়ন কামাল উদ্দন ইউপি সচিব মো. ই্য়ামিনের সঙ্গে আতাঁত করে সুবিধাভোগীদের প্রাপ্য চাল মৎস্য ব্যবসায়ী মাহাবুবুলের কাছে বিক্রি করেছেন এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওৎপেতে ছিলেন স্থানীয় বাসিন্ধারা। পরে ৬ বস্তা চাল রাতের আধাঁরে মাহাবুবুলের বাড়িতে নিয়ে ঘরে মজুত করার সময় সরকারী বস্তাবর্তী চাল গুলো তারা আটক করেন। পরে স্থানীয় বাসিন্ধারা বিষয়টি শশীভূষণ থানা পুলিশ ও ইউনিয়নের প্রশাসক এবং ও ইউপি সচিবকে জানালেও তারা ছিলেন নিরব ভুমিকায়। এনিয়ে ওই ইউনিয়নের সুবিধাভোগী কার্ডধারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃ্িষ্ট হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কার্ডধারী জানান, তার নামের কার্ড নিয়ে চাল আনতে দুদিন ইউনিয়ন পরিষদে গেলেও কোন চাল পাননি। তাদের প্রাপ্য চাল নিয়ে তালবাহানা করেছেন কর্মকর্তারা। প্রতিবাদ জানালে তাদের কার্ড বাতিলের হুমকি দেন। মৎস্য ব্যবসায়ী মাহাবুবুল জানান, তিনি চাল গুলো ইউনিয়ন পরিষদের পিয়ন কামালের কাছ থেকে খরিদ করেছি।কামাল নিজেই রিক্সা যোগে চাল আমার বাড়িতে পাঠিয়েছেন।পরে রাতে স্থানীয়রা ওই চাল আমার বসত ঘর থেকে আটক করেন।

পিয়ন কামাল উদ্দিন জানান, ভিজিডির চাল বিক্রির সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমি চাল দেয়ার কেউ না। চাল গুলো কিভাবে মৎস্য ব্যবসায়ীর বাড়িতে গেছে আমার জানা নাই। ইউপি সচিব মো. ইয়ামিন জানান, গত ৮ জানুয়ারী তিনি এবং ওই ইউনিয়নের তদারকি কর্মকর্তাকে নিয়ে ভিজিডির চাল বিতরন করেছেন। সুবিধাভোগীরা না আসায় সব চাল বিতরন করা হয়নি। তবে ওই চাল কিভাবে মৎস্য ব্যবসায়ী পেয়েছেন তা আমার জানা নাই।তবে ধারনা করা হচ্ছে ওই চাল গুলো কার্ডধারীদের কাছ থেকে খরিদ করেছেন। সরকারী চাল বিক্রির নিয়ম আছে কিন এমন প্রশ্নের জাবাবে ইউপি সচিব আরোও বলেন, সরকারী চাল বেচা বিক্রির কোন নিয়ম নেই। তবে আমি ব্যস্ততার কারনে যেতে পারিনি। ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবো।

চর কলমী ইউনিয়নের প্রশাসক মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারবাইজার মো. খলিলুর রহমান জানান, কার্ড জমা নিয়েই সুবিধাভোগীদের মধ্যে চাল বিতরন করা হয়। বিতরন শেষে এখনও ১০ জন সুবিধাভোগী না আসায় তাদের চাল আমাদের গুদামে মুজদ রয়েছে।তবে ধারনা করা হচ্ছে ওই চাল গুলো হয়তো কোন কার্ডধারী থেকে খরিদ করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসনা শারমিনি মিথি জানান, বিষয়টি শুনে ওই ইউনিয়নের প্রশাসক ও সচিবকে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

 

 

বার্তাবাজার/এস এইচ