বগুড়া বিমানবন্দরটি প্রায় দুই যুগ পর চালুর উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরেজমিনে বগুড়া বিমানবন্দর পরিদর্শন করেন বিমান বাহিনীর প্রধান ও বেবিচকের চেয়ারম্যানসহ কর্মকর্তারা। পরিদর্শন শেষে বিমানবন্দর চালুর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন তারা। বিমানবন্দর চালু করতে ১২শ’ কোটি টাকা প্রয়োজন ও ৬ হাজার ফুট রানওয়ে প্রয়োজন। রোববার (১২ জানুয়ারি) বগুড়ায় বিমানবন্দর এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তারা।

এর আগে বেবিচক সূত্র জানিয়েছে, রোববার বিমান মন্ত্রণালয়, বিমানবাহিনী প্রধান ও বেবিচক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টরা সরেজমিনে বগুড়া বিমানবন্দর পরিদর্শন করবেন। এটা চালু করার জন্য আরও জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। শুরুতে অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চালুর কথা চিন্তা করা হচ্ছে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়ায় বিমানবন্দর স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয় ১৯৮৭ সালে। কিন্তু নানা জটিলতায় সেই উদ্যোগে ভাটা পড়ে। এরপর ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে বিএনপি সরকারের শেষ দিকে এখানে বিমানবন্দর স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। এ জন্য ২২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন পায়। ১৯৯৫ সালে সদর উপজেলার এরুলিয়া এলাকায় বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের পাশে ১০৯ একর জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রকল্পের আওতায় রানওয়ে, কার্যালয় ভবন ও কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ, রাস্তাঘাট নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করে। প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০০০ সালে। কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে বিমান আর ওড়েনি। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোট সরকার বিমানবন্দরটি বাণিজ্যিকভাবে চালুর কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

স্থানীয় হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী ও পুলিশের তথ্যানুযায়ী, প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৫ হাজার বিদেশি পর্যটক বগুড়ায় যান। বাংলার প্রাচীন রাজধানী মহাস্থানগড়সহ দর্শনীয় ও ধর্মীয় একাধিক ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে। বগুড়া জেলায় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ছোট-বড় প্রায় ২০টি শিল্পকারখানা রয়েছে। এসব শিল্পকারখানার মধ্যে এসেনশিয়াল ড্রাগস, ওয়ান ফার্মাসিউটিক্যালস, ট্রান্সকম কনজ্যুমার প্রোডাক্ট, উত্তরা মোটরস, এবিসি টাইলস অন্যতম। বগুড়ায় চারতারকা মানের হোটেল রয়েছে দুটি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাণিজ্যিকভাবে বিমানসেবা চালুর মতো সব ধরনের অনুকূল পরিবেশ বগুড়ায় রয়েছে।

রোববার বিমানবন্দর পরিদর্শন শেষে বিমান বাহিনী প্রধান হাসান মাহমুদ খান বলেছেন, বগুড়া এয়ারপোর্ট ( বিমানবন্দর) চালু করতে হলে প্রয়োজন সর্বনিম্ন ৬ হাজার ফুট রানওয়ে তবে আছে এখন ৪৭০০ ফুট। এটি চালু হলে অর্থনৈতিক পরিসর আরও সমৃদ্ধ হবে। বাজেট পেলেও স্বল্প পরিসরে চালু করতেও কমপক্ষে একবছর সময় লাগবে।দেশের নবম বিমানবন্দর হিসেবে চালু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বিমান বাহিনীর প্রধান আরো বলেন,এ বন্দর নিয়ে আগের সরকারকে একাধিকবার প্রস্তাব দিলেও কোনো গুরুত্ব দেয়নি তারা। আমরা নতুন করে সরকারকে প্রস্তাব দিব।

 

বার্তাবাজার/এস এইচ