চুয়াডাঙ্গা শহরে নির্মাণাধীন ভবনের মালিকের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপির নেতা জাহিদুল ইসলাম সোহেলকে (সোহেল রানা) দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জাহিদুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তাঁর বাড়ি চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার পুরোনো হাসপাতাল পাড়ায়। নির্মাণাধীন বাড়ির মালিক নুরুজ্জামানের স্ত্রী আরিফা পারভীনের করা চাঁদাবাজির মামলায় গত মঙ্গলবার রাতে জাহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে গতকাল আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠান।
এদিকে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তারের ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপি গতকাল রাতে শহরের কোর্টপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ে জরুরি সভা ডাকে। পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের নেতাদের সভা ডাকা হয়। সভায় সবার সম্মতি নিয়ে জাহিদুল ইসলামকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। পরে রাতেই সিরাজুল ইসলাম ও মাহমুদুল হক স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জাহিদুল ইসলামকে দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা শহরের মুক্তিপাড়ায় ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করছিলেন। গত ৫ আগস্টের পর বিএনপির নেতা জাহিদুল ইসলামসহ ১০ থেকে ১২ জন মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন এবং সেই চাঁদার টাকা না দিলে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন। দাবি করা চাঁদার টাকা না পেয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা সম্প্রতি নির্মাণাধীন ভবনের কাছ থেকে ৬ গাড়ি ইট, ২ হাজার ইটের অন্য ১টি গাড়ি, ২ মেট্রিক টন রড ও ৩০ ঘনফুট কাঠ জোর করে নিয়ে যান।
ভুক্তভোগী নুরুজ্জামান বিষয়টি প্রতিবেশী ও স্বজনদের জানান। এতে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁর (নুরুজ্জামানের) ক্ষতি করার হুমকি দেন। তাঁর বাড়ির সামনে থেকে ৬ জানুয়ারি দুই হাজার ইটের আরও একটি গাড়ি জোর করে নিয়ে যান তাঁরা। উপায় না পেয়ে নুরুজ্জামান তাঁর বাড়ি নির্মাণের জন্য কেনা ৬০ গাড়ি ইট অন্যজনের কাছে বিক্রি করে দেন। মঙ্গলবার সেসব ইট ট্রাকে করে সরানোর সময় জাহিদুল ইসলাম ও তাঁর অনুসারীরা বাধা দেন। তাঁরা হুমকি দিয়ে বলেন, ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে ইট সরাতে দেবেন না।
এ ঘটনায় নুরুজ্জামানের স্ত্রী আরিফা পারভীন বাদী হয়ে মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা সদর-থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। পরে দুপুরে শহরের কোর্টপাড়া থেকে জাহিদুল ইসলামকে আটক করে পুলিশ। রাতে মামলা নেওয়া হলে সেই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।