অন্তর্বতীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ভয়ংকর ষড়যন্ত্র চলছে ভেতরে ভেতরে। জড়িতদের কেউ কেউ সরকারী চাকরীজিবি, এদের মধ্যে কেউ আবার ছাত্র, যুব এমনকি ব্যবসায়ী নেতা বলে জানা যাচ্ছে। আজকে যাকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তিনি কাজকে কলমে একজন সরকারী প্রভাষক হলেও খ্যাতি রয়েছে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের দাপুটে নেতা হিসেবে। সরকার পতনের আগেও তিন পরিচিত ছিলেন ডেপুটি স্পীকারের ঘনিষ্টজন হিসেবে। তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহৃত বিভিন্ন ছবি এবং অন্যন্য তথ্যে বিষয়টি প্রায় সকলেরই জানা।

৩৪ বিসিএস এর শিক্ষা ক্যাডারে দ্বায়িত্বপালনরত এই কর্মকর্তার নাম আব্দুর রাজ্জাক। বর্তমানে তিমি রামগড় সরকারি কলেজ, খাগড়াছড়িতে কর্মরত। রাষ্ট্রপতি এবং সাবেক স্পীকার শামসুল হক টুকুসহ সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান ডিলুর একান্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। ফলে ক্ষমতার দাপটে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পেও কাজ করেছেন। একটু পেছনে তাকালেই দেখা যাচ্ছে, পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাথেও তার নাম ডাক রয়েছে। নেতা হিসেবে গত বছরের শুরুতেই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে, সাবেক মন্ত্রী ডিলু পুত্র গালীবের নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারি চাকুরী বিধি লংঘন করে নিজেই চালিয়েছেন প্রচারণা। এছাড়াও নিজেকে নৌকার পক্ষের লোক প্রমানে স্লোগান দিয়েছেন অসংখ্য জনসভায়। মন্তনালয়েও এসব নেতাদের ডিও লেটার ব্যবহার করেছেন বলে দায়িত্বশীল সুত্র থেকে জানা গিয়েছে।

বর্তমানে ছাত্র জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফলে নতুন বাংলাদেশ যেখানে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাওয়ার কথা সেখানে এই ধরনের কিছু সুবিধাভোগী সরকারি কর্মচারীগণ অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। সেই সুযোগে ২৫ ক্যাডারের নেতা বনে গিয়েছিল জনাব আব্দুর রাজ্জাক। বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারের বিরুদ্ধেও সমস্ত প্রবেশিকায় তিনি দাপিয়েছেন ক্ষমতার দম্ভে। প্রশাসনে থাকা নিষ্ঠাবান কর্মকর্তারও রীতিমত বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তেন তার এমন কর্মকান্ডে। অনেকটা জোর করেই বানিয়ে নিয়েছিলেন ৩৪ স্বার্থরক্ষা সিন্ডিকেট। যার উদ্দেশ্য অবৈধভাবে সুবিধা গ্রহণ ছাড়া আর কিছুই ছিলো না। সচিবালয়ের বাহিরে বসেই আধুনিক টেন্ডার বানিজ্যে সহায়তা করা। চাকরী তদবীর, বদলী, পদন্নোতি থেকে শুরু করে এহেন কিছু নেই যা তিনি করেন নি। তার নিজ এলাকাতেও অধিকাংশ লোক তার ব্যবহারে বিব্রত।

সাবেক সরকারের আমলে গ্রন্থনা করেছেন একাধিক বইপত্র যার বেশিরভাগই তৈলচর্চা ছাড়া কিছু নয় মর্মে অভিহিত করেছেন পাঠক শ্রেণীর কেউ কেউ। তিনি তার এক পোস্টে সৈরাচার সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের মা বলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উল্লেখ করেছিলেন।

সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী ছস্ত্র জনতার ছাতার নিচে ঠাঁই নিয়ে, নিজেকে আওয়ামী বিরোধী প্রমাণে মরিয়া এই সরকারী প্রভাষক। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাবে সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের পক্ষে প্রশাসনের আভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাশাপাশি আওয়ামীলীগের গোপণ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার অভিযোগ এনেছেন অনেকেই। কেউ বলছেন, প্রকাশ্যে বৈষম্যের রং মেখে থাকা আব্দুর রাজ্জাক মুলত একজন কট্টরপন্থী আওয়ামী ষড়যন্ত্রের ধারক। যার কাঁধে চেপে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এখনো আওয়ামীলীগের ফ্যাসিবাদীরা সুবিধা নিতে যাচ্ছেন।

এ সকল বিষয়ে জানার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করা হলেও তাকে সংযুক্ত করা সম্ভব হয় নি।

এদিকে বিষয়টি জানিয়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ন মহলে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা জানান, বর্তমান সরকার সব রকম প্রতিবন্ধকতা ছাপিয়ে সমূলে শক্ত এবং স্থিত। এই সরকারের মুল লক্ষ্য সরকারের সর্বস্তরে সংস্কার নিশ্চিত করার পাশাপাশি কর্মচারী আচারণবিধী পরিপন্থী সকলকে চিহ্নিত করা তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। বর্তমানে জনপ্রসাশনের দ্বায়িত্বে কর্তব্যরত জনৈক উর্দ্ধতন ককর্মকর্তা জানান, সরকারের স্থায়ী সদস্য হিসেবে দেশ বিনির্মানের যে সুযোগ, এইটুকু ব্যবহার করেও জনগনের জন্য যথেষ্ঠ ভূমিকা রাখা সম্ভব। চাহিদা কেবলমাত্র সদিচ্ছা। তারপরও কেউ যদি কোন রাজনৈতিক দলের বা মতের এজেন্ডা বাস্তবায়নে উদ্দ্যোগ গ্রহণ করে থাকেন, তার বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।