বগুড়ায় তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় বাড়ছে শীতের তীব্রতা। কুয়াশায় মোড়ানো থাকছে দিনভর। বেলা বাড়লেও দিনভর দেখা মিলছে না সূর্যের। আর এই কনকনে শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ।

কুয়াশা যেমন তেমনি বাড়ছে হিমেল হাওয়া। এতে কষ্ট বেড়েছে খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষের। তীব্র শীতে বেশি বিপাকে পড়েছে বয়স্ক ও শিশুরা। দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে শীতজনিত রোগ, সেই সাথে হসপিটালগুলোয় বেড়েছে রুগী। বগুড়া আবহাওয়া অফিস থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় এ জেলায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা । বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায় বগুড়া শহরের আশেপাশের এলাকাগুলোতে ছিন্নমূল মানুষগুলো শীত নিবারণের জন্য আগুন পোহাচ্ছে। রিক্সা চালকরা নাক কান বেঁধে চলাচল করছে। এসব মানুষের পরনে তেমন শীতের গরম কাপড় চোখে পড়ে না। হাজার কষ্টেও কাজ করে জীবন সংগ্রাম করছেন তারা।

এদিকে আবার কেউ কেউ গরম কাপড়ের ওপর গায়ে জড়িয়ে নিয়েছেন চাদর বা পাতলা কম্বল। অপরদিকে মধ্য ও উচ্চ বিত্ত পরিবারের লোকজন শীতের পোশাক পরেও শীতের কামড় সামলে উঠতে পারছে না। আর এমন শীতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পোহাতে হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষকে। বগুড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলার নিম্ন আয়ের কিশোর-কিশোরীরা যুবক বৃদ্ধ মানুষ জীবিকার সন্ধানে শহরে কাজ করতে আসে।

কেউ রিকশা চালায়, কেউ হোটেল-রেস্তোরাঁয় শ্রমিকের কাজ করেন এবং নারীরা বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন। বয়স্ক নারী ও পুরুষ এসব কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করে। তবে জীবিকার তাগিদে তারা পথে বের হলেও তীব্র শীতের কারণে ভালো ভাবে কাজ করতে পারছে না। এসব নিম্ন আয়ের মানুষ। ঠিকমতো নিত্যদিনের খরচের টাকাও রোজগার করতে পারছেন না। বগুড়ার স্থানীয় মানুষরা জানাই,বুধবার রাত থেকেই জেলার তীব্র শীতের প্রকোপ ছিল। রাত ৮ টার আগেই শহরে মানুষের চলাফেরা কম দেখা গেছে। যারা ঘরের বাইরে এসেছিলেন তারা কনকনে ঠাণ্ডার ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেকেই তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঘন কুয়াশা পড়ছে। মেঘে ঢাকা আকাশে দেখা মেলেনি সূর্যের। সড়কে যানবাহন চলেছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। তীব্র শীতের সাথে ছিল হিমেল বাতাস। এ কারণে জেঁকে বসা শীতের অনুভূতি আরও বেড়েছে।

বগুড়া শহরের রিক্সা চালক আলমগীর হোসেন জানান, কাজ না করলে খাওয়া নেই, তাই যত শীত হোক বের হতেই হবে। বাতাস আর কুয়াশা থাকার কারণে কষ্ট হচ্ছে, কষ্ট হলেও কিছু করার নেই কাজ করতেই হবে। বগুড়া আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক আব্দুর রশিদ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় এ জেলায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা এখন পর্যন্ত এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগের দিন বুধবার জেলায় সর্বনিম্ন ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। তবে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে জানান তিনি।

 

বার্তাবাজার/এস এইচ