২৪ বছর বয়সী তরুণী সানজানা সাথী বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার জয়দেবহায়াত গ্রামে। ওই গ্রামের মৃত বাবর আলীর মেয়ে তিনি। এক ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সাথী সবার ছোট।

শুরুতেই সানজানা সাথী ফ্রিল্যান্সিংবিষয়ক মৌলিক জ্ঞান রপ্ত করে নেন ইউটিউবের বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখে। এরপর ফ্রিল্যান্সিংবিষয়ক বেশ কয়েকটি কোর্সও করে নেন তিনি।

কঠোর পরিশ্রম আর প্রবল ইচ্ছে ও মানসিক শক্তির বলে খুব অল্প সময়ে সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সাথী

বর্তমানে সাথী ৩২ টি দেশের প্রায় ১২০ জনেরও বেশি ক্লায়েন্ট রয়েছে। ফেসবুক এডসেন্স, গুগল এডসেন্স ও ইউটিউব এডসেন্সসহ অনলাইন প্রতিষ্ঠানের টেকনিক্যাল ও কারিগরি একাধিক বিষয়ে খুব দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন । মাসে আয় করছেন লক্ষাধিক টাকা।

ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার নিয়ে তিনি বলেন, ‘দেড় বছর বয়সে বাবা মারা যাওয়ার পর অভাবের সাথেই বেড়ে উঠেছি। ২০১৯ সালে নিজ জেলা থেকে ইন্টার পাশ করার পড়ে ঢাকায় চলে এসে অনার্সে ভর্তি হই। কলেজের শুরু থেকেই একটা অফিসে কাজ করি এবং পাশাপাশি ফ্রী সময়ে ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও দেখি। পরবর্তীতে ফ্রিল্যান্সিং এর উপর একাধিক কোর্স করি এবং স্কিল ডেভেলপমেন্ট করি যাতে পরবর্তীতে তা নিয়ে আয় উপার্জনও করা যায়। তারপর মাঠে নেমে যাই পুরোদমে। প্রথম ৭ মাসের মাথায় কাজ পাই, ওই কাজের সুবাদে ধীরে ধীরে বিদেশি ক্লায়েন্টও খুঁজে পেয়ে যাই। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি।’

সাথী মনে করেন, পড়ালেখার পাশাপাশি প্রত্যেকেরই কিছু দক্ষতা থাকা দরকার। যা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে দেখাবে। নিজে কাজকর্ম করে আর্থিক উপার্জনের সুযোগও তৈরি করে দিবে। এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম পরিশ্রম এবং মানসিক ইচ্ছে শক্তি থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

এই মেধাবী তরুণীন ভবিষ্যতে পড়ালেখা শেষ করে তরুণীদের ক্যারিয়ার বিষয়ক স্কিল অর্জনে প্রশিক্ষণ দেওয়ানোর পাশাপাশি একটি ফ্রিল্যান্সিং প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা তার স্বপ্ন। তিনি বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি আয় করছি, পরিবারকে সাপোর্ট দিতে পারছি এতেই আমি অনেক খুশি।

তিনি বলেন, কোনো কাজে হতাশ হওয়া যাবে না। লেগে থাকতে হবে। লেগে থাকলে সফলতা আসবেই। কেউ কেউ শুরুতে যেকোনো কাজে খুব আগ্রহী হয়। কিছুদিন যেতে না যেতেই আগ্রহ শেষ হয়ে যায়। রাতারাতি কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। এসব বুঝতে হবে।