নীলফামারীর ডিমলায় আবাদি জমির মাটি ও ব্যবহার অযোগ্য বালু দিয়ে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের মেহেরপাড়া থেকে রব্বানী মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণের জন্য মেসার্স শফিকুল আলম নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পরিচালনা করছে।

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রভাতী প্রকল্পের আওতায় ৪ কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৭৪১ টাকা ব্যয়ে টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেহেরপাড়া থেকে ২ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম রব্বানী মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ডিমলা উপজেলার চরখড়িবাড়ী গ্রামে সরেজমিনে দেখা যায়, তিস্তা নদীর চর কেটে এবং ধানক্ষেতের মাটি সংগ্রহ করে ট্রাক্টরের মাধ্যমে রাস্তার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুরো রাস্তার মাটিতে ধান গাছের নাড়া, কাশবাগানের খড়ি ও খড়কুটো দেখা গেছে।

চরখড়িবাড়ী গ্রামের বাবুপাড়া এলাকার বাসিন্দা জাবেদ আলী বলেন, “এখানে যে বালু দেওয়া হচ্ছে, তা রাস্তার কাজে ব্যবহারযোগ্য নয়। এই বালু জমি ভরাটের জন্য উপযুক্ত।” সাহেব মেম্বার পাড়া গ্রামের আব্দুল লতিফ জানান, কাজটি নীলফামারীর একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। রাস্তার কাজ তদারকির জন্য একটি কমিটি রয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা বলেছি, যে বালু ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে জঙ্গল ও খড়কুটো রয়েছে। এমন বালু দিয়ে কাজ না করার জন্য বলেছি। কমিটি জানিয়েছে, পরবর্তীতে ভালো বালু দেওয়া হবে।”

উপজেলার সাব-ঠিকাদার জিয়া বলেন, “আমাকে কমিটিতে রাখা হয়েছে বলে শুনেছি, তবে আমি এতে জড়িত নই। কমিটির অন্যান্য সদস্য আকিক ও সাইজুল এ কাজে সরাসরি যুক্ত।” আকিক জানান, “বালুর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠার পর নষ্ট বালু সরিয়ে ভালো বালু দেওয়া হচ্ছে।” বালু পরিবহনের কাজে নিয়োজিত চালক হোসেন আলী বলেন, “তিস্তা নদীর চর থেকে বালু সংগ্রহ করে রাস্তার কাজে নিয়ে আসা হচ্ছে। তবে এই বালুতে কিছুটা কাশ ও ঘাসের শিকড় থাকতে পারে।” অপর চালক ফরিদ আলী জানান, “প্রতি ট্রলি বালুর জন্য ৪২০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।”

মেসার্স শফিকুল আলম ট্রেডার্সের মালিক শফিকুল ইসলাম ডাবলু বলেন, “আমার লাইসেন্সে মোকছেদুল কাজ করছে। তার সঙ্গে কথা বলুন।” মোকছেদুল ইসলাম জানান, “যে অভিযোগ উঠেছে, তা তদন্ত করে নষ্ট বালু সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদেরও ভালো মানের বালু ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল মিয়া বলেন, “নদী থেকে বালু উত্তোলন ও রাস্তার কাজে অনিয়মের বিষয়ে জানতে পেরে উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়েছি। যদি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয়, তবে মাঠে গিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

বার্তাবাজার/এস এইচ