মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহীনের বিরুদ্ধে বদলী, অবৈধ নিয়োগ ও নার্সদের জিম্মি করে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতন হওয়ার পর বিএনপির নাম ভাঙিয়ে নার্সদের জিম্মি করে অর্থ আদায়, বদলী ও বিজ্ঞপ্তি ছাড়া অবৈধ ভাবে ওয়ার্ড বয় নিয়োগ সহ একাধিক দুর্নীতি ও অনিয়ম করে চলেছেন পুরুষ নার্স শাহীন। এমনকি নিজের ডিউটি না করে নার্স সুপারভাইজার এর রুমের মধ্যে বসে সকল কর্মচারীদের কাজের তদারকি করছেন। অষ্টম তলায় বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন(বিএনএ) ও নার্সেস এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ন্যাব) এর কার্যালয়কে নিজের ব্যক্তিগত অফিস বানিয়ে ব্যবহার করে চলেছেন তিনি। তুহিন ও আশিক নামের দুজনকে কোন রকমের বিজ্ঞপ্তি ছাড়া ওয়ার্ড বয় হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তারা এখন কাজ করছেন জরুরি বিভাগে। সহকারী নার্স মোতালেব,সিনিয়র স্টাফ নার্স সাইফুল ও জান্নাতারা শিমুলকে জিম্মি করে তাদের কাছে থেকে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের এক ওয়ার্ড বয় বলেন, শাহীন স্যার বিএনপির নাম নিয়ে ৫ আগস্টের পরে অনেকের কাছে থেকে টাকা নিয়েছেন। এইটা হাসপাতালের সবাই যানে। তিনি তো নার্স তার ডিউটি থাকবে কোন ওয়ার্ডে কিন্তু তিনি নার্স সুপারভাইজারের রুমে বসে সবার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। অষ্টম তলায় তার নিজের একটা অফিস করেছে। সেখানে বাহিরের লোকজন এনে আড্ডা দেয়। তিনি এখন কোন ডিউটি করে না। জরুরী বিভাগে আশিক ও তুহিনকে নিয়োগ দিয়েছে। তাদের কাছে থেকে টাকা নিয়ে তাদের এখানে নিয়োগ দিয়েছে।

সহকারী নার্স মোতালেব হোসেন বলেন, শাহীন আমার কাছে মনে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন। আমাকে তার পরেও সিলেটে বদলি করে দিয়েছেন। শুধু আমার কাছে থেকে নিয়েছে তা না শিমুল আর সাইফুলের কাছে থেকেও নিয়েছে। প্রায় ৬ লক্ষ টাকা দিয়েছি তিনজনে। জরুরী বিভাগের তুহিন বলেন, আমাকে শাহীন স্যার চাকরি দিছে। কিছু জানার থাকলে তার কাছে থেকে জানেন। জরুরী বিভাগের আশিক বলেন, শাহীন স্যার আমাকে এখানে চাকরি দিয়েছে। আর এখন রুগী অনেক আপনার সাথে পরে কথা বলবো।

সিনিয়র স্টাফ নার্স সাইফুল বলেন, আমি এখন চট্টগ্রাম আছি। আমার এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে শাহীনের সাথে যোগাযোগ হয়েছিল। তার মাধ্যমে আমর কাছে টাকা চেয়েছিলেন। দিলে হয়তো এখানে আসতে হতো না। টাকা দেইনি বলে আজ আমি চট্টগ্রাম।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নার্স বলেন, ৫ আগষ্টের পর মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে যারা বদলি হয়েছেন সবার কাছে থেকে শাহীন ২০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। এমনকি আমাদের তত্ত্বাবধায়ক স্যারও তাকে টাকা দিয়ে এখানে আছেন। তিনি তো আওয়ামী লীগ করতেন তাই শাহীনকে টাকা দিয়ে এখানে আছে। সবাই এখন শাহীনকে দেখে ভয় পায়। সিনিয়র স্টাফ নার্স জান্নাতারা শিমুলের মুঠোফোনে ফোন করলে তিনি শাহীনকে টাকা দেওয়ার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহীন বলেন, আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। এই সকল অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমার ডিউটি নার্স সুপারভাইজারের ওইখানে। তাই আমি ওইখানে বসি। মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন বলেন, এই বিষয়ে আমি আপনার কাছে থেকেই জানতে পারলাম। আর হাসপাতালে কোন ধরনের বিজ্ঞপ্তি বা নিয়োগ দেয়া হয়নি। কেউ যদি লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে বিষয়টি দেখবো।

 

বার্তাবাজার/এস এইচ